ক্রুজার ইউএসএস কেপ সেন্ট জর্জ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দৃশ্য। ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে পেন্টাগন। ছবি: রয়টার্স
দীর্ঘ পাল্লার বিধ্বংসী টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। তবে অস্ত্রের মজুত নিয়ে আর কোনো উদ্বেগ না থাকলেও, এই বিষয়ে শেষ কথা বলবেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্পের আকস্মিক অবস্থান পরিবর্তন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার ফোনালাপের প্রভাব নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন দূর-পাল্লার 'টমাহক' ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে দেওয়ার জন্য হোয়াইট হাউজকে সবুজ সংকেত দিয়েছে। অস্ত্রভাণ্ডারে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না—এই মূল্যায়ন শেষে পেন্টাগন এই ছাড়পত্র দিয়েছে। যদিও টমাহক সরবরাহের বিষয়ে চূড়ান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রয়েছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ওপর। এই বিষয়ে অবগত তিনজন মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের জোরালো অনুরোধ ছিল। কিয়েভ মনে করে, প্রায় এক হাজার মাইল পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে থাকা জ্বালানি ও তেল অবকাঠামোতে আরও কার্যকরভাবে হামলা চালাতে সক্ষম হবে।
পেন্টাগনের জয়েন্ট স্টাফ তাদের মূল্যায়ন হোয়াইট হাউজকে জানানোর ঠিক পরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের কয়েক দিন আগেও ট্রাম্প বলেছিলেন, "আমাদের অনেক টমাহক আছে, চাইলে ইউক্রেনকে দেওয়া সম্ভব।"
কিন্তু বৈঠকের দিনেই ট্রাম্প তার অবস্থান পাল্টে ফেলেন। তিনি জেলেনস্কিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের দেশ রক্ষার জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্র "প্রয়োজন" এবং আপাতত তা ইউক্রেনকে দেওয়া হবে না। ট্রাম্পের এই আকস্মিক অবস্থানে বিস্মিত হন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই পরিবর্তন আসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের একদিন পরেই। পুতিন ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছিলেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো শহরে আঘাত হানতে পারে। পুতিন আরও যুক্তি দেন যে, এই ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে বড় কোনো পরিবর্তন আনবে না, বরং এতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পেন্টাগনের এই মূল্যায়ন আশাবাদী করে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের। তাদের ধারণা, এখন আর ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র না দেওয়ার তেমন কোনো অজুহাত ওয়াশিংটনের নেই।
হোয়াইট হাউজ এবং পেন্টাগন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে সিএনএন সূত্রের খবর, ট্রাম্প টমাহক দেওয়ার সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করেননি। বরং, প্রশাসন দ্রুত সরবরাহের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছে, যাতে ট্রাম্প নির্দেশ দিলেই তা কার্যকর করা যায়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিয়ে কিছুটা অধৈর্য ও হতাশও হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপে ফেলতে তিনি রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং হাঙ্গেরিতে পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, টমাহক সরবরাহ নিয়ে মজুত সংক্রান্ত আশঙ্কা এখন আর না থাকলেও, এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনের সেনাদের কীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, সেটাই এখন মূল চিন্তার বিষয়।
বিষয় : ইউক্রেইন ক্ষেপণাস্ত্র টমাহক যুক্তরাষ্ট্র
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
