হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে গাজায় আবার তীব্র হামলা চালাতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শের পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে গাজায় অবিলম্বে শক্তিশালী হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।' তবে কখন ও কোথায় এই হামলা চালানো হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।
ইসরায়েলের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গতকাল সোমবার হামাস যে জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে, সেটি চুক্তির শর্তানুযায়ী বর্তমানে তাদের হাতে থাকা ১৩ জন জিম্মির কারও মরদেহ নয়। ইসরায়েলের দাবি, এটি দুই বছর আগে অপহৃত এক ব্যক্তির মরদেহ, যার দেহাংশের কিছু অংশ ২০২৩ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে উদ্ধার করেছিল।
অপর দিকে, হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করায় তারা আজ সকালে পাওয়া একজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত করছে। কাসেম ব্রিগেড আরও বলেছে, ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের তৎপরতা জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা, খনন করা এবং উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে, ফলে মরদেহ খুঁজে বের করতে দেরি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ৯ অক্টোবর মিসরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখে গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি সই হয় এবং পরদিন ১০ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর হয়।
তবে এই ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। সেদিন গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপরই গাজায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছর ধরে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৫০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।