ইসরায়েল সরকার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ অনুমোদন করার পর সামরিক যানের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ইসরায়েলি সেনারা। ১০ অক্টোবর, ২০২৫।ছবি: রয়টার্স
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ অনুমোদন করার পর ইসরায়েলি সেনারা গাজার কিছু অংশ থেকে সরতে শুরু করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারাও ইতিমধ্যে বিধ্বস্ত নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে সংঘাতের আদৌ স্থায়ী অবসান হচ্ছে কি না, তা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গভীর শঙ্কা ও সন্দেহ বিরাজ করছে।
ইসরায়েল সরকার আজ শুক্রবার সকালে হামাসের সঙ্গে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় সহিংসতা থামানো সম্ভব হবে এবং এরপর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ইসমাইল জায়দা এলাকায় ফিরে এসে সেখানকার ভয়াবহতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, 'আমার বাড়িটি যে এখনো দাঁড়িয়ে আছে, তা নিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি। তবে জায়গাটা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার প্রতিবেশীদের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, পুরো এলাকা গুঁড়িয়ে গেছে।'
যুদ্ধবিরতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে রাদওয়ান প্রশ্ন তোলেন, 'তারা যেভাবে বলছে, আদৌ কি তা শেষ হয়েছে? কেন কেউ এসে আমাদের বলছে না যে সত্যিই যুদ্ধবিরতি হয়েছে এবং আমরা নির্ভয়ে থাকতে পারি কি না।'
গাজায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। এই পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার শুরু হবে।
গাজা উপত্যকার দক্ষিণে খান ইউনিস শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা থেকে কিছু ইসরায়েলি সেনা সরে গেছেন। তবে ট্যাংকের গোলার শব্দ এখনো শোনা যাচ্ছে।
একইভাবে, গাজার কেন্দ্রস্থল নুসেইরাত শিবিরে দেখা গেছে, সেনারা তাঁদের অবস্থান থেকে সরে পূর্বে ইসরায়েলি সীমান্তের দিকে চলে গেছেন। তবে আজ ভোরে গুলির শব্দ শোনার পর অন্য কিছু সেনা ওই এলাকায় অবস্থান নেন। ইসরায়েলি বাহিনী গাজা নগরীর ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী সড়ক থেকেও সরে গেছে।
সেনা প্রত্যাহারের খবরে শত শত মানুষ শহরের কেন্দ্রে ফেরার আশায় জমায়েত হলেও, কাছাকাছি জায়গায় গুলির শব্দ শোনার কারণে অনেকেই এগোতে সাহস পাননি। শুধু অল্প কয়েকজন হেঁটে জায়গাটি পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
এই সুযোগে উদ্ধারকর্মীরা আগে গাজা শহরের যেসব এলাকায় যেতে পারেননি, এখন সেখানে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এর আগে হামলা হয়েছে এমন এলাকা থেকে কমপক্ষে ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয় : ইসরায়েল হামাস গাজা ফিলিস্তিন সেনাবাহিনী
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh