বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের প্রত্যন্ত তিব্বত অংশে ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে আটকে থাকা সব হাইকার ও কর্মীদের সফলভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে অঞ্চলে পরিচালিত অন্যতম বৃহত্তম একটি তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘটল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার উদ্ধারকারীরা কয়েকশ স্থানীয় গাইড, চমরী গাইয়ের রাখাল এবং আটকে পড়া অবশিষ্ট হাইকারদের নিরাপদে নামিয়ে আনে।
রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার ওই অঞ্চলে অস্বাভাবিক শক্তিশালী তুষারঝড়ের সময় ব্যাপক তুষারপাত হয়। এর ফলে ৪ হাজার ২০০ মিটার (১৩,৮০০ ফুট) উচ্চতার কর্মা উপত্যকাটি জমে থাকা গভীর তুষারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং সেখানে শত শত হাইকার আটকা পড়েন।
শনিবার সারাদিন ধরে উপত্যকাটিতে তুষারপাত চলে। এরপর রবিবার উদ্ধারকারীরা প্রায় ৩৫০ জন হাইকারকে নিরাপদে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করে যে, মোট ৫৮০ জন পর্বতারোহী এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা ৩০০ জনেরও বেশি গাইড, চমরী গাইয়ের রাখাল ও অন্যান্য কর্মীকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এই আকস্মিক তুষারঝড়ের কারণে বিশ্বের ষষ্ঠতম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, চীন-নেপাল সীমান্তের ৮,১৮৮ মিটার (২৬,৮৬৪ ফুট) উচ্চতার চো ওইয়ুয়ে আরোহণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাডিসন মাউন্টেনিয়ারিংয়ের একটি পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিব্বতের এই এভারেস্ট অঞ্চলটি বড় ধরনের পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। গত বছর এই অঞ্চলে রেকর্ড ৫ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। তবে এই ভারি তুষারপাতের জেরে, সিনহুয়া জানিয়েছে, কর্মা ও রংশর উপত্যকা এবং চো ওইয়ুসহ তিব্বতের এই এভারেস্ট অঞ্চল সাময়িকভাবে জনসাধারণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
এই ভারি তুষারপাতের কারণে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং, কিংহাই এবং গানসুতেও আরও কয়েকশ হাইকার সমস্যায় পড়েছিলেন। এই তুষারপাতের মধ্যে হাইপোথার্মিয়া ও তীব্র পার্বত্য অসুস্থতায় দুর্ভাগ্যবশত একজনের মৃত্যুও হয়েছে।