সুদানের আল-ফাশের শহরের একটি মসজিদে ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২০ জন। শুক্রবার ভোরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার জন্য আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করা হলেও, তারা এখনও দায় স্বীকার করেনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ফজরের নামাজের সময় যখন মুসল্লিরা মসজিদে জড়ো হয়েছিলেন, ঠিক তখনই এই হামলা চালানো হয়।
গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে আরএসএফ এবং সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। দারফুর অঞ্চলের শেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি আল-ফাশের দখলের জন্য আরএসএফ ধীরে ধীরে শহরটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই শহরটিতে প্রায় তিন লাখ বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন, যারা উভয় পক্ষের লড়াইয়ের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
চলতি সপ্তাহে আরএসএফ নতুন করে আল-ফাশেরে হামলা শুরু করেছে। শহরের বাইরে অবস্থিত বাস্তুচ্যুতদের শিবিরেও ভয়াবহ হামলার খবর পাওয়া গেছে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের (এইচআরএল) স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শিবিরের একটি বড় অংশ এখন আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে।
সুদানের বিশ্লেষক ও অধিকারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, সাধারণ নাগরিকরা আরএসএফের আক্রমণের শিকার হতে পারেন। কারণ তাদের অধিকাংশই আধা-সামরিক বাহিনীটির দৃষ্টিতে শত্রু জনগোষ্ঠীর অংশ।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এই সংঘাত ক্রমশ জাতিগত রূপ নিচ্ছে। উভয় পক্ষই প্রতিপক্ষকে সহায়তার অভিযোগে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থার নথি অনুযায়ী, আরএসএফ দখলকৃত এলাকায় অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূলের নীতি চালাচ্ছে। সম্প্রতি ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, আরএসএফ প্রকাশ্যেই আল-ফাশেরকে অ-আরব জনগোষ্ঠীমুক্ত করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।
তবে আরএসএফ বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, তারা কোনও জাতিগত সংঘাতে জড়িত নয়।