× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নেপালে কেন ফুঁসছে 'জেন-জি'?

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:১২ পিএম । আপডেটঃ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪১ এএম

পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে সংঘর্ষের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। কাঠমান্ডু, নেপাল। ছবি: সংগৃহীত

নেপালের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়ে দেশটির লেখক, চিকিৎসক ও সাবেক আমলারা বলেছেন, তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভকে অবমূল্যায়ন করলে বড় বিপদ আসন্ন। গত সোমবার কাঠমান্ডুতে তরুণদের ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রাণহানির ঘটনার পর এই সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন তাঁরা। বিশিষ্টজনদের মতে, দুর্নীতি, দুঃশাসন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি দলগুলোর দাম্ভিকতার বিরুদ্ধে তরুণ সমাজের চাপা ক্ষোভের বিস্ফোরণই এই আন্দোলনের মূল কারণ।

সোমবার নেপালের পার্লামেন্ট ভবনের কাছে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে আইনসভা ভবনের সংরক্ষিত নিরাপত্তা জোনে ঢুকে পড়লে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে সমাজের বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবীরা সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের সাবেক ডিন ডা. অরুণ সায়ামি বলেন, 'সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই নেতারা মনে করেন, তাঁরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। কিন্তু বর্তমান তরুণ প্রজন্ম তাঁদের দাস নয়। রাজা জ্ঞানেন্দ্রের মতো আচরণ বন্ধ করুন।'

নেপালের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণা উপ্রেতিও বর্তমান সরকারের দমন-পীড়নের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, 'আজকের ঘটনা আমাকে রাজা জ্ঞানেন্দ্রের শাসনামলের শেষ দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি তখন নির্বিচার দমননীতি গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমান সরকারও তরুণদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের মাধ্যমে একই পথে হাঁটছে।' তিনি আরও বলেন, ১৯৮০-এর দশকে পঞ্চায়েত শাসনব্যবস্থার সময়কার আন্দোলন দমনের চেয়েও সোমবারের ঘটনা ছিল ভয়াবহ।

ডা. অরুণা বলেন, 'বর্তমান ক্ষমতাসীন নেপালি কংগ্রেস এবং সিপিএন-ইউএমএল দল তরুণদের বিরুদ্ধে অহংকার দেখিয়েছে এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে। কিন্তু এই দমন-নিপীড়ন অন্যায়, ব্যাপক দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কমাতে পারবে না।'

গত বৃহস্পতিবার নেপালের সরকার ফেসবুকসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়, কারণ এসব প্ল্যাটফর্ম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করেনি। লেখক খগেন্দ্র সাংগ্রৌলা বলেন, 'সরকার বিরোধী মত দমন করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা যত বেশি দমন-পীড়ন চালাবে, বিরোধী কণ্ঠস্বর তত বেশি শক্তিশালী হবে এবং বিক্ষোভ থামবে না।'

উড়োজাহাজ প্রশিক্ষক বিজয়া লামা মনে করেন, আজকের তরুণ সমাজ অনেক বেশি বুদ্ধিমান, শিক্ষিত এবং দেশের ভবিষ্যৎ। তিনি সরকার ও তরুণদের প্রতি উভয়কেই সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান। সাবেক সচিব কিশোর থাপা বলেন, 'শুধু দমন-পীড়নের মাধ্যমে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ভিন্নমত থামানো যাবে না। সরকারের উচিত জনগণের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ করা।'

বিশ্লেষকদের মতে, আজকের যুবসমাজ কোনো রাজনৈতিক দলের অন্ধ আনুগত্য করে না। তাদের এই ক্ষোভের প্রধান কারণ, সরকার সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.