ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে ইউক্রেনের মন্ত্রিপরিষদ ভবনে আগুন ধরে যায় এবং ভবনটির বেশিরভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে এক মা ও তার শিশু রয়েছে।
শুধু মন্ত্রিপরিষদ ভবন নয়, কিয়েভের বেশ কিছু আবাসিক ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এই হামলার পরপরই আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে।
বড় পরিসরে হামলা
রবিবার ভোরে ওডেসা, খারকিভ, দনিপ্রো, জাপোরিঝঝিয়া, ক্রিভি রিহ, সুমি এবং ক্রেমেনচুকসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে একযোগে বিমান হামলার সতর্কবার্তা জারি করা হয়। এসব শহরে বেসামরিক অবকাঠামো ও আবাসিক ভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো নিশ্চিত করেছেন যে, ড্রোন বিস্ফোরণে এক নারী ও তার শিশু রাস্তায় ছিটকে পড়ে মারা যান। সুমি অঞ্চলে আহতদের মধ্যে এক শিশু রয়েছে এবং জাপোরিঝঝিয়ায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় রাশিয়া ৮০৫টি ড্রোন, ৯টি ইস্কান্দার-কে ক্রুজ মিসাইল এবং ৪টি ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৭৪৭টি ড্রোন এবং ৪টি ক্রুজ মিসাইল ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।
এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো বলেন, "আমরা ভবন পুনর্নির্মাণ করব, কিন্তু হারানো প্রাণ আর ফিরে আসবে না।" ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হামলাকে 'ইচ্ছাকৃত অপরাধ' আখ্যা দিয়ে বলেন, "এভাবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে, যখন অনেক আগেই বাস্তবসম্মত কূটনীতি শুরু হতে পারত।" তিনি এই হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যেসব দেশ রাশিয়ার তেল কিনবে, তাদেরও শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এই হামলাকে 'কাপুরুষোচিত' বলে মন্তব্য করেছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ’র সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন জেলেনস্কি এবং এই পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন।