× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মরুভূমির শুষ্ক বাতাসেও সুপেয় পানি, যুগান্তকারী যন্ত্র আবিষ্কারে এমআইটি

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:৫৫ পিএম । আপডেটঃ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪৪ এএম

মরুভূমির শুষ্ক বাতাস থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকদের তৈরি একটি যন্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি, এক রুক্ষ ও শুষ্ক মরুভূমি। যত দূর চোখ যায় শুধু বালু আর পাহাড়ের সারি। এখানে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন, আর খাবার পানি তো আরও দুষ্প্রাপ্য। কিন্তু বিজ্ঞানের এই যুগে কোনো সমস্যাই সমাধানহীন নয়। এই ভাবনা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল গবেষক মরুভূমির শুষ্ক বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের একটি যুগান্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন।

শুষ্ক বাতাসই পানির উৎস

এই যন্ত্রের মূল উপাদান হলো 'হাইড্রোজেল' নামের একটি শোষক পদার্থ, যা লবণের সঙ্গে মিশ্রিত। এটি কাচের একটি বাক্সে রাখা হয়েছে। দেখতে ছোট একটি জানালার মতো এই যন্ত্রটি কোনো ধরনের বিদ্যুৎ ছাড়াই কাজ করে, কেবল সূর্যের তাপই এর জন্য যথেষ্ট।

যন্ত্রটি বাতাস থেকে সরাসরি জলীয় বাষ্প শোষণ করে। হাইড্রোজেল বাষ্প শোষণ করলে ফুলে ওঠে, এবং বাষ্প ছেড়ে দিলে আবার সংকুচিত হয়ে যায়। এই ছেড়ে দেওয়া বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কাচের দেয়ালে বিশুদ্ধ পানির কণা হিসেবে জমা হয়, যা একটি নল দিয়ে পাত্রে সংগ্রহ করা যায়।

প্রয়োগ ও কার্যকারিতা

এমআইটির যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সুয়ানহে ঝাও বলেন, "মরুভূমির বাতাস অত্যন্ত শুষ্ক হওয়ায় এই যন্ত্র থেকে খুব বেশি পানি সংগ্রহ করা যায় না। তবে এই প্রক্রিয়ায় দিনে একটি কাপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পরিমাণ সুপেয় পানি পাওয়া সম্ভব।" তিনি আরও জানান, এই যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হলো অত্যন্ত শুষ্ক পরিবেশে মানুষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে খাবার পানি সরবরাহ করা।

বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ নতুন কোনো কৌশল নয়। শত শত বছর ধরে বিভিন্ন প্রাচীন পদ্ধতিতে এই কাজটি করা হচ্ছে। তবে এমআইটির এই যন্ত্রটির বিশেষত্ব হলো, এটি অত্যন্ত কম আর্দ্রতাযুক্ত পরিবেশেও সফলভাবে কাজ করতে পারে।

হাইড্রোজেলের জাদুকরি ক্ষমতা

এই গবেষণায় ব্যবহৃত হাইড্রোজেল একটি স্পঞ্জের মতো পদার্থ, যা আর্দ্রতা শোষণের অসাধারণ ক্ষমতা রাখে। অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পল ওয়েস্টারহফ জানান, হাইড্রোজেল তার নিজের আকারের তুলনায় দশ গুণ পর্যন্ত ফুলে উঠতে পারে। এটি বেশ সাশ্রয়ী হওয়ায় শিশুদের ডায়াপারেও এটি ব্যবহৃত হয়। কম শক্তি খরচ করে কার্যকরভাবে পানি সংগ্রহ করতে পারায় এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও হাইড্রোজেল নিয়ে গবেষণা হয়েছে। যেমন, চিলির আতাকামা মরুভূমিতে বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেল ও লবণের মিশ্রণ ব্যবহার করে প্রতি বর্গমিটারে প্রায় দশমিক ৩৮ লিটার বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন, যা মেরু অঞ্চলের বাইরের সবচেয়ে শুষ্ক স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.