থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ভূমিজাই থাই পার্টির প্রেসিডেন্ট আনুতিন চার্নভিরাকুল। শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে এমপিদের ভোটে তিনি এই পদে নির্বাচিত হন।
কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আনুতিনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন থাইল্যান্ডের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পিউ থাই পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা চিকাসেম নিতিসিরি। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি আনুতিনের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। ৪৯২ আসনবিশিষ্ট থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে বিজয়ী হতে কমপক্ষে ২৪৭ জন এমপির সমর্থন প্রয়োজন ছিল। ৫৮ বছর বয়সী আনুতিন পেয়েছেন ৩১১টি ভোট।
নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ২৯ আগস্ট থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালতের রায়ে ক্ষমতা হারান সাবেক প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। এর মধ্য দিয়ে তিনি থাইল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েও এক বছরের মাথায় পদচ্যুত হন। শুক্রবারের ভোটাভুটির মাধ্যমে পদচ্যুত পায়েতংতার্নের স্থলাভিষিক্ত হলেন আনুতিন।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পিউ থাই পার্টির মূল নিয়ন্ত্রণ সিনাওয়াত্রা পরিবারের হাতে। পায়েতংতার্ন এই পরিবারের সদস্য এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে। গত বছর নির্বাচনে পিউ থাই পার্টির সঙ্গে জোট করেছিল ভূমিজাই থাই পার্টি। সেই নির্বাচনে জয়ের পর পায়েতংতার্ন প্রধানমন্ত্রী হন এবং আনুতিন হন উপ-প্রধানমন্ত্রী।
তবে গত জুনে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রার একটি ফোনকল ফাঁস হওয়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে তার সরকার। এই ঘটনার জেরে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে সাংবিধানিক আদালতের রায়ে তাকে পদ হারাতে হয়। এই ঘটনার পরই জোট থেকে সরে গিয়েছিল আনুতিনের ভূমিজাই থাই পার্টি।
শুক্রবার ভোটাভুটিতে থাইল্যান্ডের প্রধান বিরোধী দল পিপলস পার্টি আনুতিন চার্নভিরাকুলকে সমর্থন দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির একজন এমপি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, "আনুতিন আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে আগামী চার মাসের মধ্যে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এই কারণেই আমরা তাকে সমর্থন দিয়েছি। যদি তিনি প্রতিশ্রুতি না রাখেন, তাহলে পিপলস পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে।"
সূত্র : রয়টার্স, আলজাজিরা