আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী এক ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার এই কম্পনে মৃতের সংখ্যা আড়াইশ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। রোববার গভীর রাতে মানুষ যখন ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখনই এই ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ চাপা পড়ে থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তিস্থল হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদের কাছে। এর পর অন্তত তিনটি পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে, যেগুলোর মাত্রা ছিল ৪.৫ থেকে ৫.২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার এবং নানগারহার প্রদেশ। কুনার প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, নুরগাল, সাকে, চাপা দারা এবং মানোগি জেলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভূমিধসের কারণে বহু এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। সীমিত সরঞ্জাম নিয়ে উদ্ধারকারীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তালেবান সরকার এই বিপর্যয় মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের পর। ছবি: সংগৃহীত
ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে এর কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কাবুল এবং প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়। রাতের অন্ধকারে এই আকস্মিক দুর্যোগে আফগানিস্তানের বিপর্যস্ত মানুষ আরও একবার গভীর সংকটের মুখে পড়ল।