গাজা সিটি।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের যে পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, তাতে সেখানে নতুন করে অভিযান শুরু হলে আরও বেশি দুর্ভোগে পড়বে এই বাসিন্দারা। গাজা সিটি, যেখানে এখনও বাস করে আনুমানিক ১০ লাখ মানুষ, সামনে সেখানে আসতে চলেছে অন্ধকার দিন।
গাজায় যুদ্ধের শুরুর দিকে কয়েকমাসে তারা অন্য জায়গায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তবে জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি হলে যুদ্ধ শেষের আশায় তারা আবার গাজা সিটিতে ফেরত আসে।
যুদ্ধের সময়টিতে গাজা সিটির বাসিন্দারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাড়ি থেকে দূরে ছিল। তারা ক্রমাগত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। মানবেতর অবস্থায় থেকেছে।
এরপর গাজা সিটির উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসে তারা বাড়িঘর সব ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকতেই দেখেছিল। তারপরও যেখানে যেভাবে পেরেছে সেভাবেই বসতি গড়ার চেষ্টা করেছে বাসিন্দারা। তাদের বিশ্বাস ছিল যুদ্ধ হয়ত শেষ পর্যন্ত শেষ হবে।
কিন্তু গাজা সিটিতে জীবন এরই মধ্যে কঠিন হয়ে পড়েছে। গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিয়ে নতুন করে অভিযান শুরু করলে এবং ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দিলে মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়।
এখন সেখানে বসিন্দাদের দুর্ভোগের নতুন আরেক চক্র শুরু হতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে।
ইসরায়েল সরকার নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান চালানোর জন্য বরাবরের মতোই আরও একবার গাজা সিটির সব বাসিন্দাকে দক্ষিণে সরে যেতে বাধ্য করবে।
কয়েকটি খবরে বলা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়া দুই মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হতে পারে। এই সময়ে দেখা যেতে পারে বিভিন্ন স্থানে কারফিউ, লোকজনকে সরে যাওয়ার একের পর এক নির্দেশ এবং রাস্তায় ফের ক্লান্ত-শ্রান্ত সাধারণ মানুষদের কাফেলা।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই আতঙ্ক নিয়ে পরিস্থিতি নজরে রাখছে। ইসরায়েল যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তাতে সামনে তাদের জন্য আছে বড় ঝুঁকি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের বিচ্ছিন্নতা যে বাড়বে সেটি আঁচ করা যাচ্ছে এখনই। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা জয় এমনকি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য্যকেও পরীক্ষায় ফেলে দিতে পারে।
তবে লেবাননে হিজবুল্লাহকে পরাজিত করা, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসন পতনে সহায়তা করা এবং ঘোর শত্রু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে বিপর্যস্ত করার পর ইসরায়েল এ অঞ্চলের সুপারপাওয়ার হিসাবে নিজেদের মর্যাদা সুদৃঢ় করেছে- যে দেশটি যুদ্ধ পরিচালনা করে একাধিক শত্রুকে পরাজিত করতে সক্ষম।
এই আঞ্চলিক সুপারপাওয়ার দেশটিকেই ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে যেভাবে নাকাল করেছিল, তার প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহুকে এখন অনেক বেশি সাহসী এবং ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত বলেই মনে হচ্ছে। তিনি হয়ত এখন ভাবছেন, কে তাকে থামাবে?
বিষয় : গাজা নেতানিয়াহু ইসরায়েল
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh