যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট ও গ্যাপসহ বড় বড় মার্কিন রিটেইলাররা ভারত থেকে অর্ডার স্থগিত করেছে।
এনডিটিভি প্রফিটকে একাধিক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে বলে শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, মার্কিন ক্রেতারা ই-মেইল ও চিঠির মাধ্যমে পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্যের চালান আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে। শুল্ক আরোপের কারণে ক্রেতারা বাড়তি খরচ ভাগাভাগি করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভারতীয় রপ্তানিকারকদেরই এই বোঝা বহন করতে বলেছে।
বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, ট্রাম্পের আরোপ করা দ্বিগুণ শুল্কের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি খরচ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রগামী অর্ডার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। ফলে ভারতের ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ওয়েলস্পান লিভিং, গোকালদাস এক্সপোর্টস, ইন্ডো কাউন্ট ও ট্রাইডেন্টের মতো ভারতীয় বড় বড় রপ্তানিকারকদের পণ্য বিক্রির ৪০ থেকে ৭০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক।
এছাড়া ভারতের পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় রপ্তানির বাজার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৩৬.৬১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির ২৮ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম টেক্সটাইল রপ্তানিকারক ভারত আশঙ্কা করছে, এই পরিস্থিতিতে তারা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কাছে অর্ডার হারাতে পারে, যাদের ওপর বর্তমানে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ রয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে এবং বাকি ২৫ শতাংশ ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে।
এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়া থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেল আমদানির জন্য ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা জরুরি ও উপযুক্ত।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই শুল্ককে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক” বলে উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারতের জ্বালানি আমদানি বাজার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এবং ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। এই বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
ভারতের দাবি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপে সরবরাহ মোড় ঘুরে যাওয়ায় তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে। তখন যুক্তরাষ্ট্র এই আমদানিকে সমর্থন জানিয়েছিল, যাতে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল থাকে।
বিষয় : ভারত ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব সংবাদ যুক্তরাষ্ট্র
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh