× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গাজায় খাবারের খোঁজে যাওয়া ফিলিস্তিনি কিশোরের চোখে গুলি করলো ইসরাইলি বাহিনী

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৩৬ পিএম । আপডেটঃ ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯:০২ পিএম

খাবার সংগ্রহ করতে যাওয়া গাজার এক কিশোর আব্দুর রহমান আবু জাজারের চোখে গুলি করেছে ইসরাইলি সেনারা। এতে সে তার বাম চোখের দৃষ্টি হারাতে বসেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ১১৯ জনের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপ বা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মাত্র একদিনেই ইসরাইলিরা কমপক্ষে ৯২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ৫৬ জন খাদ্যের খোঁজে বেরিয়েছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। অবরুদ্ধ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানুষ এখন ক্ষুধার্ত অবস্থায় জীবন যাপন করছে। তারা পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষের শিকার।

১৫ বছর বয়সী আবু জাজার বলেন, আমি ভেবেছিলাম এটা আমার শেষ মুহূর্ত। মৃত্যুই আমার সামনে দাঁড়িয়ে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে এক চোখে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা আবু জাজার জানালেন, তিনি রাত ২টার দিকে খাদ্য বিতরণ পয়েন্টে যান। বলেন, এই প্রথমবার আমি ওদিকে গিয়েছিলাম। ভাইবোনদের জন্য কিছু খাবার জোগাড় করতে গিয়েছিলাম। ঘরে কিছুই নেই। তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ ঘণ্টা পর গাজা শহরের আশপাশের আল-মুনতাযাহ পার্ক পর্যন্ত পৌঁছান। বলেন, তখন আমরা দৌড়াচ্ছিলাম আর ওরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আমি আরও তিনজনের সঙ্গে ছিলাম, তিনজনই গুলিবিদ্ধ হয়। হঠাৎ মনে হল আমার শরীর দিয়ে বিদ্যুৎতের মতো কিছু বয়ে বেড়াচ্ছে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম। মনে হচ্ছিল কেউ আমাকে ইলেকট্রিক শক দিচ্ছে। তারপর আর কিছু মনে নেই। অচেতন হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরে এলে লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় আছি। পাশে থাকা লোকগুলো জানায়, সে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। 

চিকিৎসক তার চোখের সামনে একটি মোবাইল ফোনের আলো ধরেন এবং জিজ্ঞেস করেন, সে আলো দেখতে পাচ্ছে কিনা। সে কোনো আলো দেখতে পায়নি। চিকিৎসক নিশ্চিত করেন, তার চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক ক্ষত তৈরি হয়েছে। চিকিৎসা শেষে আবু জাজার বলেন, আল্লাহর রহমতে দৃষ্টিশক্তি ফিরবে বলে আশা করছি। ওদিকে মাত্র একদিনেই ইসরাইলি হামলায় ৯২ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইলি সেনারা জিএইচএফ পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে বারবার গুলি চালাচ্ছে। মে মাসে এই সংস্থা কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে কমপক্ষে ১৩০০ খাদ্যগ্রহীতাকে ইসরাইলি সেনারা গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ এবং শিশুদের মৃত্যু

গাজায় প্রতিদিন খাদ্যের জন্য হাহাকার বাড়ছে। ইতিমধ্যে ১৭৫ জন, যার মধ্যে ৯৩ জন শিশু, দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংস্থাসমূহের সমন্বয়ে গঠিত গ্লোবাল নিউট্রিশন ক্লাস্টার জানিয়েছে, ৬০০০-এর বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি দিয়ের আল-বালাহ থেকে বলেন, প্রতিদিন মাত্র ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করছে, যা পুরো জনসংখ্যার জন্য অপ্রতুল। ইসরাইলের তথাকথিত মানবিক বিরতি যে কার্যত মিথ্যা, সেটাই প্রমাণ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মানুষ এক বস্তা গমের জন্য যুদ্ধ করছে, একটা খাদ্য প্যাকেটের জন্য হন্যে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন শুধু খাবার না পাওয়ার যন্ত্রণা নয়, বরং খাদ্য ট্রাকের কাছে গেলেও মানুষ গুলি খাচ্ছে। মানে শুধু ক্ষুধার মৃত্যু নয়, বরং ক্ষুধা মেটাতে গিয়েও ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছেন।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.