× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়ার চিন্তা

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

১৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৫০ এএম । আপডেটঃ ১৮ জুলাই ২০২৫, ১২:১৬ পিএম

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য দেশটি থেকে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলোতে বেশি শুল্ক ছাড় দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা পণ্যে গড়ে ৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বাংলাদেশ। এ হার প্রায় পুরোপুরি তুলে দেওয়াও হতে পারে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

পাল্টা শুল্ক কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় দফার বৈঠক সামনে রেখে এমন চিন্তা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি চলছে বৈঠকের আগে নানা পর্যায়ে প্রস্তুতি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় দফার আলোচনায় সহায়তার জন্য ব্যবসায়ীদের একটি দল যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারে। আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে এ আলোচনা হতে পারে। এ জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে।

জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা পণ্যে শুল্কছাড় বেশি দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, ভোজ্যতেল ইত্যাদি পণ্য আমদানি বাড়াবে বাংলাদেশ। বেসরকারিভাবে দেশটি থেকে যাতে তুলা আমদানি বেশি হয়, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

তৃতীয় দফার আলোচনা কবে শুরু হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যসচিব বলেন, এখনো নির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যায়নি। তবে শিগগির তারিখ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬০টি দেশের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। ঘোষণা স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে ৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ। পরে ৯ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক বজায় রেখে সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে।

তিন মাসের শেষ সময় ছিল ৯ জুলাই। এর আগের দিন ৮ জুলাই ট্রাম্প নতুন করে ঘোষণা দিয়ে জানান, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্কহার হবে ৩৫ শতাংশ, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। নতুন হার কার্যকর হলে তখন মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ।

যদিও পাল্টা শুল্কহার কমানো নিয়ে এই তিন মাসে বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন বাণিজ্যবিষয়ক গবেষক, অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় দর-কষাকষির জন্য প্রস্তুতিপর্বে বাণিজ্য বিষয়ে গবেষক, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ বহুপক্ষীয় একটি দল গঠন করতে পারত সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৃতীয় দফার আলোচনায় সরকারের বাইরে ব্যবসায়ীদের একটি দলের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দলের প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বাংলাদেশি পোশাক আমদানিকারক বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং সহযোগিতা চাইবেন—এটা সরকারের চাওয়া। এরপর তাঁদের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তির দর-কষাকষি করার ব্যাপারে বুদ্ধি-পরামর্শ নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দল। এ ছাড়া তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য সহযোগিতা চেয়ে একজন সাবেক কূটনীতিককে অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ১২ জুন বাংলাদেশের সঙ্গে নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট (প্রকাশ না করার চুক্তি) করে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে সরকারি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বেসরকারি প্রতিনিধিদের রাখতে পারছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিকারক কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গতকাল পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফলে তাঁরা যাবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।


মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা বা সমস্যা রয়েছে কি না, সেগুলো বোঝার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন মার্কিন কোম্পানি বা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বাণিজ্য উপদেষ্টা অনলাইনে বৈঠক করেন ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে। সংস্থাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের গম বিক্রির বিষয়ে সহযোগিতা করে। সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০ থেকে ৩০ মার্কিন ডলার বেশি দিয়ে হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি করবে বাংলাদেশ।

আগের দিন বুধবার মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। শেভরনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক পুরোনো। কোম্পানির পাওনা সব পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। একই দিন মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে এলএনজি আমদানির চুক্তি রয়েছে।

আজ শুক্রবার একই ধরনের বৈঠক রয়েছে দুটি। একটি বৈঠক হবে ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের (ইউএসএসইসি) সঙ্গে। এ সংস্থা বিভিন্ন দেশে মার্কিন সয়াবিন তেল রপ্তানিতে সহায়তা করে। আরেকটি বৈঠক হবে ইউএস কটন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে। এ সংস্থাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার বিক্রি বাড়াতে কাজ করে।

২২ জুলাই আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সঙ্গে আরেকটি বৈঠক রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও জুতা আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে সংস্থাটি।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.