ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বেইজিং। চীন জানিয়েছে, ভারত-চীন সহযোগিতা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য নয়াদিল্লির সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। রোববার প্রচারিত একটি পডকাস্টে মোদি বলেন যে, ভারত ও চীনের মতো প্রতিবেশীদের মধ্যে পার্থক্য স্বাভাবিক, তবে এগুলো বিবাদে পরিণত হওয়া উচিত নয়। কারণ বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, ২০২০ সালে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) ঘটনাগুলো ‘উল্লেখযোগ্য উত্তেজনা’ তৈরি করেছে এবং উভয় পক্ষ তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সোমবার বেইজিংয়ে একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মোদির মন্তব্যকে ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য চীন ভারতের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। মাও বলেন, ‘চীন (মোদি এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং) এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকীকে একটি সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতাকে উন্নীত করতে এবং চীন-ভারত সম্পর্ককে সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চীন আগ্রহী।’
মাও আরো বলেন, ‘গত অক্টোবরে কাজানে শি এবং মোদির মধ্যে সফল বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি ও বিকাশের জন্য কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। উভয়পক্ষই আন্তরিকভাবে আমাদের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ বোঝাপড়া অনুসরণ করেছে, সকল স্তরে আদান-প্রদান ও বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করেছে।’
গত অক্টোবরে ভারত ও চীন এলএসি বরাবর সামরিক সমঝোতায় পৌঁছেছিল, ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে লাদাখ সেক্টরে সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। এই সমঝোতাটি রাশিয়ার কাজান শহরে মোদি এবং শির মধ্যে বৈঠকের পরে হয়েছিল এবং দুই নেতা সীমান্ত বিরোধের সমাধান করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করতে সম্মত হন। মাও মোদির মন্তব্যকেও পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, হাজার হাজার বছর আগে ভারত ও চীনের সম্পর্কের মধ্যে বিরোধের কোনো ইতিহাস নেই এবং চীন-ভারত সম্পর্কের মূলধারাটি পারস্পরিক শিক্ষা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার ওপর দাঁড়িয়ে।
তিনি বলেন, চীন ও ভারত দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে একে অপরকে বোঝা এবং সমর্থন করা উচিত। একে অপরকে সফল হতে সাহায্য করা উচিত। দুই দেশের ২.৮ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের স্বার্থে চীন ও ভারতের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। আঞ্চলিক দেশগুলোর অভিন্ন আকাঙ্খা পূরণ, গ্লোবাল সাউথকে শক্তিশালী করা এবং বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। চীনের সাথে মতবিরোধের পরিবর্তে আলোচনার উপর জোর দিয়ে মোদি পডকাস্টে বলেছিলেন যে, ‘বিরোধের পরিবর্তে, আমরা সংলাপের উপর জোর দিই। কারণ শুধুমাত্র সংলাপের মাধ্যমেই আমরা একটি স্থিতিশীল সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখতে পারি যা উভয় দেশের সর্বোত্তম স্বার্থের জন্য প্রয়োজনীয়।’
গত অক্টোবরে শির সাথে মোদির বৈঠকের পর দুই পক্ষই সীমান্তে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে। মোদির কথায়, ‘আমাদের সহযোগিতা শুধু উপকারী নয়, এটি বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়...প্রতিযোগিতা খারাপ কিছু নয় তবে সংঘর্ষ হওয়া উচিত নয়।’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বিষয় : মোদি হিন্দুস্তান টাইমস
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh