বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে জনতা। ওদিকে, আসাদের পতনে কেবল সিরিয়াতেই নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সিরীয়রা উল্লাসে ফেটে পড়েছে।

ছবি: বিবিসি

দামেস্ক থেকে বিবিসি-র সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আসাদের পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দামেস্কের রাজপথে নেমে উল্লাসে মেতে ওঠে সিরিয়াবাসী। এর মধ্যেই দলে দলে মানুষ আসাদের প্রাসাদে ঢুকে প্রায় সবই লুট করে নিয়ে গেছে। তছনছ করে দিয়েছে গোটা ভবন।

ছবি: বিবিসি

লুটপাট চালানো এই মানুষদের বেশির ভাগই এসেছে গ্রামাঞ্চল থেকে। তারা প্রতিশোধের আগুন নিয়ে প্রসাদের দিকে ছুটে যাচ্ছে। আর সেখানে ঢুকতে পেরে আনন্দে ফেটে পড়ছে। ভেতরের পরিস্থিতি খুবই বিশৃঙ্খল।

ছবি: বিবিসি

মানুষজন ভেতরে যাচ্ছে। হাতে করে যা পারে তাই-ই নিয়ে যাচ্ছে। আবার জিনিস নিয়ে যাওয়ার সময় ছবিও তুলছে। আসাদ ও তার বাবার বছরের পর বছরের নিপীড়নমূলক শাসনের প্রতিশোধই এভাবে নিচ্ছে তারা।

দামেস্ক। ছবি: রয়টার্স

বিদ্রোহী যোদ্ধারা যখন রাজধানী দামেস্কে ঢুকছিল, ঠিক তখন ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ থেকে পালিয়ে যান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ। টানা ২৪ বছর সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।

এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদ পরিবারের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়েছে। দামেস্কের আগে আলেপ্পো, হামা ও হোমস নগরীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা।

দামেস্ক। ছবি: রয়টার্স

আসাদের পতনের জেরে রোববার খুশিতে রাস্তায় নেমে আসে সিরীয়রা। সেনাবাহিনীর ট্যাংকের ওপর উঠে উল্লাস করেন অনেকে।বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে উল্লাসে মাতে সাধারণ মানুষ।

সিরিয়ার হোমসে অস্ত্র উঁচিয়ে আনন্দ–উল্লাস করে বিদ্রোহীরা। আসাদের বিদায়ঘণ্টা বাজা্র পর শনিবার মধ্যরাতেও জনতা উল্লাসে আতশবাজি করেছে।

বৈরুত। ছবি: রয়টার্স

সিরিয়ার বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সিরীয়রা এই উল্লাসে একাত্মতা প্রকাশ করে রাস্তায় নেমেছে। বার্লিনে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পতাকা উড়িয়ে উল্লাস করেছে।

তুর্কি। ছবি: রয়টার্স

তাদের ব্যানারে লেখা ছিল “গণতন্ত্র আমাদের আকাঙ্খা”। ২০১৫ সাল থেকেই বার্লিনে আশ্রয় নিয়ে আছে বহু সিরীয়। আর জার্মান সরকারের হিসাবমতে দেশটিতে প্রায় ১০ লাখ সিরীয় আছে।

তুরস্কের ইস্তম্বুলেও সিরীয়রা ‘সিরিয়ার বিপ্লবের সঙ্গে একাত্মতা’ প্রকাশ করে রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতেও।

গ্রিস। ছবি: রয়টার্স

ওদিকে, গ্রিসে সিরীয় বিদ্রোহীদের সমর্থকরা রোববার উল্লাস করে রাজধানী এথেন্সের সিরীয় দূতাবাসে ঢুকে ছাদে বিদ্রোহীদের পতাকা ওড়ায়। পুলিশ তাদের কয়েকজনকে আটক করলেও পতাকা নামায়নি। দূতাবাসের বাইরেও কিছু মানুষ জড়ো হয়ে উল্লাস করে।