ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের সদস্য | ফাইল ছবি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ৯ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় বাংলাদেশির মৃত্যুর খবরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, “সীমান্ত হত্যা অবশ্যই দুদেশের ভালো সম্পর্ক সৃষ্টির ক্ষেত্রে একটা অন্তরায়।”
তিনি বলেন, “সব ভালো সম্পর্ক তো শুধু দুদেশের সরকারের নয়, মানুষেরও বিষয়। একটি মানুষ যখন বর্ডারে গুলিতে মারা যায়, সারাদেশের মানুষের মধ্যে একটা প্রতিক্রিয়া হয়, সেটা একটা নেতিবাচক দিক যেটা আমরা চাই না।”
গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় সীমান্তে নিহত হন ১৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস।
গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় সীমান্তে গুলিতে প্রাণ হারায় বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস। তিন দিন পর তার মরদেহ ফেরত দেয় বিএসএফ
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে ওই ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর চারদিনের মাথায় প্রায় একই কায়দায় প্রাণ গেছে আরেক কিশোরের।
সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সীমান্তে গুলিতে ১৫ বয়সী কিশোর জয়ন্ত সিংহের মৃত্যুর খবর দিয়েছে পুলিশ।
জয়ন্তর মরদেহ নিয়ে গেছে বিএসএফ, ওই কিশোরের বাবাসহ দুজন আহত হয়েছেন বলেও পুলিশের ভাষ্য।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, সোমবার ভোররাতে উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের কান্তিভিটা সীমান্তের ৩৯৩ নম্বর পিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷
জয়ন্ত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ফকির ভিঠা গ্রামের মহাদেব কুমার সিংহের ছেলে।
স্বর্ণা দাস হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশের কড়া প্রতিক্রিয়ার চার দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সীমান্তে গুলিতে ১৫ বয়সী কিশোর জয়ন্ত সিংহের মৃত্যুর খবর দিয়েছে পুলিশ।
দুপুরের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিশ্চয়তার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। পেলে অবশ্যই শক্তভাবে প্রতিবাদ জানাব।”
বাংলাদেশে নতুন সরকারের এই সময়ে চার দিনের ব্যবধানে সীমান্তে দুটি হত্যার ঘটনায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে- এমন তিনি বলেন, “ভারতের সাথে যখন আপনারা বলছিলেন ‘সোনালী সম্পর্ক’ চলছে, তখনও ঠিক এই ঘটনা ঘটেছে।
“কাজেই, এটার কোনো পরিবর্তন হয় নাই। আমি তো মনে করি, সেটার এক ধরনের ধারাবাহিকতা চলছে।”
‘সংবেদনশীল’ সম্পর্কের এই সময়ে এসব গুলিকে ‘উসকানিমূলক’ মনে হয় কি-না, এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “আমি তো এটা বললাম, যখন সোনালী সম্পর্ক আমাদের ছিল, তখনও তো একই ঘটনা ঘটেছে। কাজেই আলাদা কিছু দেখার সুযোগ নাই।
“এটা অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য একটা বিষয়। সেটা তখনও অগ্রহণযোগ্য ছিল, এখনও অগ্রহণযোগ্য।”
সীমান্ত হত্যা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের সূত্র ধরে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “উনি যেটা বলেছেন, সেটা বাস্তব অবস্থান- আমরা অবশ্যই ভালো সম্পর্ক চাই। কিন্তু উনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আমি চাই সেটা সার্বভৌমত্ব ও সমতার ভিত্তিতে’।
“এবং আমরা চাই যে, সম্পর্কটা একতরফা হওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, দ্বিপক্ষীয় হবে।”
সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার জানা মতে, আমরা এখনও বাড়তি সতর্কতা জারি করিনি। স্বরাষ্ট্র (মন্ত্রণালয়) যদি মনে করে যে, আসলে ‘এ রকম করা প্রয়োজন’, তাহলে তারা করবে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh