× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ইরানি ড্রোনের জনপ্রিয়তায় উদ্বিগ্ন মার্কিনিরা

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৪:০৯ পিএম । আপডেটঃ ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০৪ এএম

ইরানের তৈরি শহীদ-১৩৬ মডেলের ড্রোন | ছবি—সংগৃহীত

ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে ইরান। ইরানের উচ্চ পাল্লার আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র গুলোর বিষয়ে মার্কিনীরা বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে। আমেরিকান একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থিঙ্কট্যাঙ্কের মতে, ইরানি ড্রোনগুলো ইউক্রেন ও ইসরাইলকে ছাড়িয়ে গেছে।

সম্প্রতি আমেরিকান সংস্থা "ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসি" ইরানি অস্ত্রের ব্যাপারে বৈশ্বিক আগ্রহ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনে বলেছেন, যদিও বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান ও তার প্রক্সি যোদ্ধাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিরোধ বা হামলার মাত্রা সীমিত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের এটা মনে রাখতে হবে, মধ্যপ্রাচ্য এখন ইরানি অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রে ভরপুর। কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছে, আমেরিকান ফাউন্ডেশন " ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসি" এই প্রতিবেদনে লেবাননে ইরানের ড্রোনসহ আরো কিছু অস্ত্রের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেছে যে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীও প্রথম ঐতিহাসিক দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে। এতে একজন নিহত হয়েছিল। ইরানের তৈরি এ ড্রোন ২৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছিল।

এই আমেরিকান থিঙ্কট্যাঙ্কের বিশ্লেষণ অনুসারে, এগুলোই কেবল বর্তমান উদ্বেগজনক বিষয় নয় বরং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান তাদের পক্ষে একটি অনুকূল আন্তর্জাতিক পরিবেশের সুযোগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা এবং সামরিক অস্ত্র সরবরাহকারী হয়ে উঠছে।

এই থিঙ্কট্যাঙ্কের গবেষণা অনুসারে,ইরানের যেসব সুবিধাজনক দিক রয়েছে তার মধ্যে একটি হল যুদ্ধক্ষেত্রে তেহরানের স্বল্প খরচের ড্রোন ব্যবহার যা খুবই কার্যকর। উদাহরণ স্বরূপ, শহীদ-১৩৬ মডেলের ড্রোনের কথা বলা যায় যা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যুদ্ধের প্রথম দুই বছরে মস্কো ৪৬০০টি এই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছে। এই একই ড্রোন যা তেলআবিবের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে কিছুক্ষণ আগে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ইরানি ড্রোনগুলোর কার্যকারিতা ইউক্রেন এবং ইসরাইলকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কমপক্ষে আরও দুটি মহাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা দেখা গেছে। এভাবে ইরানি অস্ত্রের ব্যবহার থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সামরিক শক্তি অর্জনে ইরানের সাফল্যের প্রমাণ পাওয়া যায়। তেহরান ভেনিজুয়েলাকে দেশীয় ড্রোন তৈরিতে সহায়তা করছে। এ ছাড়া ইরান ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোকেও স্থানীয়ভাবে যেসব ড্রোন তৈরিতে সহযোগিতা করছে তার সথে ইরানের মোহাজের-টু ড্রোন ও শহিদ-১৭১ ড্রোনের মিল রয়েছে। ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীও ইরানের মোহাজের-৬ ড্রোন ব্যবহার করছে। সুদানও ইরানি ড্রোন ব্যবহার করছে। একই ইরানি ড্রোন সুদানী সশস্ত্র বাহিনীকে হানাদার বাহিনীর হামলা ঠেকাতে এবং কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করেছে। এ কারণে, ইরান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে ৫০ কোটি ডলার মূল্যে অস্ত্র চুক্তিতে ড্রোন অন্তর্ভুক্ত হলে এতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।  

ইরানবিরোধী এই মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক একটি অভ্যন্তরীণ সংবাদ সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে "তেহরান ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ড্রোন বাজারে তুরস্কের জায়গা দখলের পরিকল্পনা করেছে।"

প্রতিবেদনের অন্য একটি অংশে এই থিঙ্কট্যাঙ্কের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে শক্তিশালী উপস্থিতি বিশ্বের কাছে ইরানের সামরিক সক্ষমতা পরিচয় করিয়ে দেয়ার বিরাট সুযোগ এনে দিয়েছে। ২০২৪ সালে মালয়েশিয়া, কাতার ও ইরাকে আয়োজিত প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে ইরান তার সমরাস্ত্র প্রদর্শন করে এবং সৌদি আরবেও সামরিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য একটি দল পাঠায়। মস্কো এবং বেলগ্রেড অস্ত্র প্রদর্শনীতেও ইরানি অস্ত্র নির্মাতারা অংশগ্রহণ করেছিল।

এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে, আমেরিকান এবং ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত ইরান বৈশ্বিক অস্ত্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয় না। কারণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী যথাক্রমে ২০২০ সালের অক্টোবর এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর ইরানের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং ২০১৫ সালে পারমাণবিক চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

আমেরিকান ফাউন্ডেশন "ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিস" এই প্রতিবেদনে দাবি করেছে: বিশ্বব্যাপী ইরানের অস্ত্রের ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণের কারণে এই দেশটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী একটি সদস্য দেশ যখন ইরানি ড্রোন থেকে উপকৃত হচ্ছে এবং শীঘ্রই ইরানের তৈরি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও পেতে যাচ্ছে তখন নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের অস্ত্র রপ্তানির বিরুদ্ধে নতুন প্রস্তাব অনুমোদন করা অসম্ভব হবে।

এই প্রতিবেদনের লেখকরা, তেহরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর এবং একতরফা পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে পরামর্শ দিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের উচিত ইরানের ড্রোন বা অন্যান্য অস্ত্র উত্পাদন এবং মজুদের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক পদক্ষেপ নেয়া যাতে ইরানের সরবরাহ খাতকে ব্যাহত করা যায়।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.