× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের প্রস্তুতি

ন্যাশনাল ট্রিবিউন রিপোর্ট

০৫ মার্চ ২০২৪, ২১:১৮ পিএম । আপডেটঃ ০৫ মার্চ ২০২৪, ২১:১৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকেন; রোজা রাখতে পারবেন কিনা? ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা, সময়কাল, খাবারের নিয়ম, হাঁটা বা ব্যায়াম এসব আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা কিছুটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় থাকেন।

রোজার সময় ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা নির্ধারণ, কিছুটা প্রাত্যহিক জীবনধারার পরিবর্তন, কিছু বিশেষ সতর্কতা, নিয়ম আর শৃঙ্খলা মেনে চললে বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীই রোজা রাখতে পারেন। যাদের ডায়াবেটিস খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, ওষুধ সেবন বা ইনসুলিন গ্রহণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আছে তারা লো রিস্ক এবং মডারেট রিস্ক গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এসব রোগী রোজার শুরুতে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে কোনো প্রকার জটিলতা ছাড়াই রোজা রাখতে পারেন। অতি বয়স্ক বারবার রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার প্রবণতা, কিডনির জটিলতায় আক্রান্ত, স্বল্পমেয়াদি অন্য অসুস্থতায় আক্রান্ত, হার্ট অ্যাটাক ও স্টোকের শিকার ডায়াবেটিস রোগীদের হাই ও ভেরিহাই রিস্ক গ্রুপে ফেলা হয়েছে। এদের রোজা রাখতে হলে ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থেকেই রাখতে হবে। সে জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের রমজান শুরুর মাসখানেক আগেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পরামর্শ নিতে হবে।

রোজা পালনে ঝুঁকিপূর্ণ কারা। অতি বৃদ্ধ বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের রোগী। গত তিন মাসের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা সুগার অধিক বেড়ে গিয়ে কিটো অ্যাসিডোসিস বা হাইপার অসমোলার স্টেটের ইতিহাস থাকলে। ঘন ঘন হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে।হাইপোগ্লাইসেমিয়া বুঝতে অক্ষম ব্যক্তি। অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-১ ডায়াবেটিস বা দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-২ ডায়াবেটিস। গর্ভবতী ডায়াবেটিক মা বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ ৪ ও ৫), ডায়ালাইসিসের রোগী। হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হলে। দিনে একাধিক বার ইনসুলিন গ্রহণ করলে। মারাত্মক ইনফেকশন, যক্ষ্মা, ক্যানসার থাকলে।দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ-৩), স্থিতিশীল হৃদরোগ বা স্ট্রোক, স্তন্যদাত্রী মা, অধিক কায়িক পরিশ্রমকারী ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নিয়মতান্ত্রিকভাবে রোজা রাখলে ডায়াবেটিস রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তুলনায় উপকৃতই হন বেশি।

রমজানে খাদ্যাভ্যাস রমজানে খাওয়ার ধরন ও সময়সূচিতে বড় পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত ইফতার ও সেহরিতে দুটি মূল খাবার গ্রহণ করা হয়। ক্যালরির মাত্রা ঠিক রেখে এই সময়ে যথেষ্ট পরিমাণে শাকসবজি, তাজা ফলমূল খেতে হবে। চিনি বা গুড়ের তৈরি খাবার পরিহার করে জটিল শর্করা, যেমন– লাল চালের ভাত, রুটি, ওটস, কর্নফ্লেক্স খাওয়া ভালো। একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে ভাগ করে খাওয়া উচিত। ইফতারে অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া ও তেলযুক্ত উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত। ইফতারে শরবত বা মিষ্টি জুস না খেয়ে ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুপানি পান করতে পারেন। সেহরি না খেয়ে রোজা রাখবেন না। ইফতার ও সেহরির মাঝখানে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। l  সেহরির নির্ধারিত সময়ের শেষভাগে ও মাগরিবের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবার গ্রহণ করুন।  ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ইনসুলিন  চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনবারের ওষুধ একবার বা দু’বারে পরিবর্তন করে আনুন।

যারা ট্যাবলেট খান, তারা সকালের ডোজটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের ডোজটি অর্ধেক পরিমাণে সেহরির আধা ঘণ্টা আগে খাবেন। তবে অবশ্যই ওষুধের মাত্রা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে নিন। সকালের ইনসুলিন ডোজটি ইফতারের আগে, রাতের ডোজটি কিছুটা কমিয়ে সেহরির আধা ঘণ্টা আগে নিতে হবে। কতটা কমাবেন, তা চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন। রোজা রাখা অবস্থায় ইফতারির নির্ধারিত সময়ের ১০-১৫ মিনিট আগে ইনসুলিন গ্রহণে রোজা নষ্ট হবে না।  ইফতারির সময় নির্ধারিত ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করে অপেক্ষা না করে ইফতার সেরে ফেলুন। সেহরিতে ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করে কোনো অবস্থাতেই না খেয়ে বা পরিমাণে কম খেয়ে রোজা রাখবেন না। হাঁটা বা ব্যায়াম রোজা রেখে দিনের বেলায় অধিক হাঁটা বা কায়িক পরিশ্রম পরিহার করতে হবে। সন্ধ্যার পর বাসায় হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। তারাবির নামাজ আদায় করলে ব্যায়ামের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত পরীক্ষায় রোজা পালনে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। তাই সেহরির বা ইফতারির দুই ঘণ্টা পর ও বিকেলে অথবা খারাপ লাগলে দিনের যে কোনো সময় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাবেন। বিকেলে বা দিনের যে কোনো সময় রক্তের গ্লুকোজ ৪ মি. মোল/লি. বা তার কম অথবা ১৬.৭ মি. মোল/লি. বা তার বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভেঙে ফেলা উত্তম। সম্ভব হলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার একটি গ্লুকোমিটার সংগ্রহে রাখুন।হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে বুক ধড়ফড়, হাত-পা কাঁপা, ঘাম, মাথা ঘোরানো, অসংলগ্নতা এমনকি জ্ঞান হারানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এ রকম অবস্থায় চিনি বা মিষ্টিজাতীয় কোনো খাবার খেয়ে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে। রোজা রেখে কখনোই আগের মাত্রার ওষুধ বা ইনসুলিন নেবেন না। নিজে নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। 

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.