সন্তানের শারীরিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য নিয়ে যেভাবে চিন্তিত থাকেন, সেভাবে সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ নিয়ে মা-বাবারা গুরুত্ব দেন না। বর্তমান সময়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আপনার সন্তানের মনের যত্ন নিতে হবে।একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে শিশুরা ছোট থেকেই মায়ের মায়া-মমতার মধ্যে বড় হয়, সে শিশুরা মানসিকভাবে কোমল ও শান্ত স্বভাবের হয়। শিশু মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় আশপাশের পরিবেশ তার ওপর প্রভাব ফেলে। সব শিশু ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে জন্ম নেয়। তার চারপাশের পরিবেশ মানসিক বিকাশে সহায়তা দেয়। প্রতিটি পরিবারে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে শিশু পরিচালনা করা হয়।
শিশুর প্রাথমিক চাহিদা পূরণে করনীয় বিষয়:শিশুর শারীরিক বিকাশের জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। আবার সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন মানসিক চাহিদাগুলো পূরণ করা। যেমন- একদিকে স্নেহ-ভালোবাসায় পূর্ণ করতে হবে, অন্যদিকে শিশুর যেসব প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা থাকে সেগুলো ন্যূনতম হলেও পূরণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
মা-বাবার সম্পর্কের গুরুত্ব:ভালো সম্পর্ক শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মা-বাবা ও বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকলে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়, শিশু আক্রমণধর্মী হয়ে ওঠে।মা-বাবার মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকা গুরুত্বপুর্ণ
মা-বাবার শিশু মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কে জ্ঞান জরুরি :শৈশবে শিশুর কি কি চাহিদা থাকে, সেগুলো কীভাবে পূরণ করা যায়, শিশুর আচরণ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্থাৎ বিভিন্ন সমস্যামূলক আচরণগুলো কীভাবে শিশুর ওপর প্রভাব বিস্তার করে ইত্যাদি।শিশুর মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে সাধারণ কিছু জ্ঞান থাকলে শৈশবে মা-বাবা সেগুলোর প্রতিকার করতে সক্ষম হবেন।ফ্রান্সের সম্রাট বা ইতালির সাবেক রাজা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছেন-তুমি আমাকে আদর্শ মা দাও, আমি তোমাকে আদর্শ জাতি উপহার দিব। আবার অন্য এক জায়গায় বলা হয়েছে- মায়ের শিক্ষাই শিশুর ভবিষ্যতের বুনিয়াদ, মা-ই হচ্ছেন শিশুর সর্বোৎকৃষ্ট বিদ্যাপীঠ।সন্তানের শিক্ষক বা আদর্শ হিসেবে বাবা-মা সম্পর্কে এমন অসংখ্য বার্তা দিয়ে গেছেন গুণীজনরা। মূলত বাবা-মা’ই হচ্ছেন সন্তানের উত্তম আদর্শ। মা-বাবা শিশুকে যে শিক্ষা দিবেন, শিশু সে শিক্ষা নিয়েই বড় হবে বা সমাজে চলতে শিখবে। এজন্য মা-বাবার সঠিক শিক্ষার পাশাপাশি সঠিক মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকা জরুরি ।
শিশুুর স্বাধীনতার বিষয়:অতিরিক্ত স্বাধীনতা যেন শিশুকে বিশৃঙ্খল করে না তোলে, সে ব্যাপারে মা-বাবার সতর্ক হওয়া উচিত। মা-বাবা শিশুর বিভিন্ন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কতটা স্বাধীনতা দেবেন, তা ঠিক করতে পারবেন।
মা-বাবার শিশুুর প্রতি আচরণ :মা-বাবার যদি একাধিক সন্তান থাকে অথবা ছেলে এবং মেয়ে উভয়েই থাকে, তা হলে মা-বাবার আচরণ অবশ্যই সব সন্তানের জন্যই নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। মা-বাবার নিরপেক্ষ আচরণ শিশুর সুস্থ মানসিকতা গঠনে সহায়ক হবে।
আদর, স্নেহ, তার সঙ্গে কথা বলা, খেলা করা, গান-ছড়া-গল্প শোনানো, তার সঙ্গে ভালো আচরণ করা, আনন্দ দান ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটে। পক্ষান্তরে তাকে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া, ভয় দেখানো, ধমক দেওয়া বা তাকে অবহেলা করা হলে তার আবেগিক, সামাজিক ও মেধাগত দক্ষতার বিকাশ ব্যাহত হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh