সংগৃহিত ছবি
দিনের শুরুটা ভাল করে হলে সারাদিনটা ভাল যায়। আয়ুর্বেদ ও জ্যোতিষশাস্ত্রের মতেও সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে দিন ভাল যায়। প্রতিদিন সকাল হলেই মনে হয় আরও একটু ঘুমিয়ে নেই। কখনো মনে হয়, সকালটা একটু দেরিতে হলেই পারতো। কিন্তু সময় তো সময়ের নিয়মেই চলে। সকাল হয়েছে তাই বিছানা ছাড়তে হবে। ঘুম থেকে ওঠার পর পর আমাদের শরীর ঠিক সুর-তালে থাকে না। তাই সে সময় শরীরের খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যাটা হলো প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই চোখ খেলার পর এমনকিছু কাজ করে থাকেন, যা একেবারেই করা উচিত নয়।
সুতরাং সকাল সকাল যে কাজগুলি ভুলেও করবেন না, সেগুলি হল..
১. ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম নয়
এমনটা করলে শরীরের কোনও উপকার তো হবেই না। উল্টো মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে। কারণ কেন জানেন? ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের শরীর অতটা সচল থাকে না। ফলে সেই সময় শরীরচর্চা করলে চোট-আঘাত লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। তাই ঘুম ভাঙার পর কিছু খেয়ে নিয়ে তার পর শরীরচর্চায় মনোনিবেশ করা উচিত। তার আগে একেবারেই নয়!
২. সকালে নাস্তা না করা
সকাল সকাল খালি পেটে থাকার অভ্যাস একেবারেই ভাল নয়। অনেকে মনে করেন সকালে না খেয়ে থাকলে ওজন কমে। এই ধারণার মধ্যে কিন্তু কোনও সত্যতা নেই। বরং বিষয়টা একেবারেই উল্টো। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেকফাস্ট হল দিনের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
তাই এই সময় পেট ভরে খাবার না খেলে কিন্তু বেজায় বিপদ! এক্ষেত্রে একাধিক জটিল রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। ফলে আয়ু কমে চোখে পড়ার মতো। তাই ভুলেও সকালে পেট খালি রাখা চলবে না।
৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
সকালের নাস্তায় পছন্দের যে কোনও খাবার খেতেই পারেন। তবে সেই লিস্টে যেন অবশ্যই থাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। কারণ আমাদের শরীরের ‘লিন মাস’ এর গঠনে প্রোটিনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই সঙ্গে সারা দিন শরীরের সচলতা বজায় রাখতে এই বিশেষ উপাদানটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
৪. ঘুম ভাঙার পর সামান্য স্ট্রেচিং মাস্ট!
সকাল সকাল আমাদের শরীর বেশ স্টিফ থাকে। সেই কারণেই তো নড়তে চড়তে একটু সময় লাগে। এক্ষেত্রে স্ট্রেচিং দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ঘুম ভাঙার পর ডান দিকে ফিরে ধীরে ধীরে ওঠার পর একটু হালকা চালে হাত-পা স্ট্রেচ করলে পেশির কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়।
৫. পানির অভাব পূরণ করা
টানা ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরে পানির প্রবেশ প্রায় ঘটে না বললেই চলে। তাই ঘুম থেকে ওঠার পর সঙ্গে সঙ্গে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে নেওয়া উচিত। আর যদি এমনটা না করেন, তাহলে কিন্তু শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেবে। সেই সঙ্গে দেহে টক্সিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ফলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাহলে উপায়! খুব সহজ। ঘুম ভাঙলেই পেট ভরে পানি খেয়ে নিন।
৬. বেড টি নয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে আমাদের মস্তিষ্কে প্রচুর পরিমাণে কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদন হয়ে থাকে। তাই এই সময় কফি খেলে কটিজলের উৎপাদন আরও বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ এবং মানসিক চাপ ঘিরে ধরে। আর সকাল সকাল যদি মনটা বিগড়ে যায়, তাহলে সারা দিনটা কেমন যেতে পারে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
৭. আলো চাই অনেক আলো
আমাদের শরীরের অন্দরে থাকা বায়োলজিকাল ক্লক বোঝে কীভাবে বলুন তো সকাল হয়ে গেছে? আলো ফোটা মাত্র বায়োলজিকাল ক্লক বুঝে যায় যে সকাল হয়ে গেছে, তখনই বিশেষ একটা সিগনাল পৌঁছে যায় মস্তিষ্কে, আর আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ি-ঘর অন্ধকার করে রাখলে শরীর অবাক হয়ে যায়। তার মনে হয় এখনও দিন হয়নি। ফলে দেহের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। তাই সকাল সকাল বাড়ি-ঘর আলোয় ভরিয়ে দিতে হয়। তাহলে বন্ধুরা আর অপেক্ষা কেন! পর্দা সরিয়ে দিন। জানালা খুলে দিন। আলোর স্রোতকে ঘরে আসার অনুমতি দিন, দেখবেন শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে যাবে।
৮.বেশিরভাগ মানুষের অভ্যাস আছে যে তারা সকালে প্রথমে আয়নার দিকে তাকায়, তবে আমাদের এটি একেবারেই করা উচিত নয়। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, আমরা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠি, তখন আমাদের শরীরে নেতিবাচক শক্তির প্রভাব পড়ে।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া
বিষয় : ঘুম ভুলগুলো আয়ুর্বেদ ও জ্যোতিষশাস্ত্রের সকাল
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh