সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন থেকে সপ্তাহে শুধু দুই দিন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার, তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এ ছাড়া ব্যবস্থাপত্রের (প্রেসক্রিপশন) কোনো ছবি তোলা যাবে না এবং রোগীর কোনো তথ্য সংগ্রহ করা যাবে না।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা দেশের সব সরকারি হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরিপত্রে মোট আটটি নির্দেশনা রয়েছে।
মূল নির্দেশনাগুলো হলো:
- সাক্ষাতের সময়সীমা: ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা শুধুমাত্র সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এই সময়ের বাইরে তারা হাসপাতালের সীমানার মধ্যে থাকতে পারবেন না।
- পরিচয়পত্র দৃশ্যমান: সাক্ষাতের সময় সব প্রতিনিধিকে অবশ্যই নিজ নিজ কোম্পানির দেওয়া পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
- তথ্য সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা: কোনো পরিস্থিতিতেই তারা রোগীর কোনো তথ্য সংগ্রহ বা ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলতে পারবেন না।
- বিজ্ঞাপন ও সিল ব্যবহার: সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কোনো বেসরকারি সিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে বিজ্ঞাপনবিহীন জেনেরিক নামের সিল ব্যবহার করা যাবে।
- ওষুধের তালিকা: চিকিৎসকদের টেবিলে বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির সরবরাহ করা কোনো ওষুধের তালিকা রাখা যাবে না।
দীর্ঘদিন ধরে সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় নিয়ে অভিযোগ ছিল। এতে একদিকে যেমন রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছিল, তেমনি হাসপাতালের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশও বিঘ্নিত হচ্ছিল। অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ বা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ লেখার জন্য চিকিৎসকদের প্রভাবিত করার অভিযোগও ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই কড়াকড়িকে তারই একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।