ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য ৬টি হল রয়েছে। প্রতিটি হলেই স্বতন্ত্র গ্রন্থাগার থাকার কথা থাকলেও কয়েকটি হলে তা নেই। কোনো কোনো হলে গ্রন্থাগার থাকলেও নিয়মিত খোলা হয় না। পুরোনো বইয়ে পড়ে গেছে ধুলার আস্তরণ।
আবাসিক শিক্ষার্থীদের দাবি, একদিকে যেমন গ্রন্থাগার খোলা হয় না, অন্যদিকে রয়েছে মানসম্মত বই এবং অবকাঠামোগত সংকট। ফলে ব্যাহত হচ্ছে জ্ঞানচর্চা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাড়া ছাত্রদের সবগুলো আবাসিক হলেই গ্রন্থাগার রয়েছে। তবে অধিকাংশ হলের গ্রন্থাগারই প্রায় বন্ধ থাকে।
তাছাড়া লাইব্রেরিতে মানসম্মত বই নেই এমন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। আবাসিক ছাত্ররা জানান, ‘নির্দিষ্ট কিছু সময় ছাড়া লাইব্রেরি প্রায় সারাক্ষণই বন্ধ থাকে। হলের এমন লাইব্রেরি থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।’তবে অন্যান্য হলে গ্রন্থাগার বন্ধ থাকার অভিযোগ না থাকলেও রয়েছে যুগোপযোগী বইয়ের অভাব।
শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আল আমিন আশরাফী বলেন, হলের লাইব্রেরিতে কেউ যায় না। কেননা এটা নিয়মিত খোলা হয় না। তাছাড়া এখানে পর্যাপ্ত বই নেই। শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশ ও অবকাঠামোগত সুবিধা নেই। শুধু অপ্রয়োজনীয় ও কিশোর উপন্যাসবিষয়ক কিছু বই আছে। তাছাড়া হলের লাইব্রেরি নির্দিষ্ট কিছু সময় খোলা থাকে। এরপর সারাক্ষণই প্রায় বন্ধ থাকে।
মাদার বখশ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আল তাহফিম হাসান মেহেদী বলেন, প্রায় এক বছর হলো আমি হলে উঠেছি। এখন পর্যন্ত এক দিনও লাইব্রেরি খোলা পাইনি। সব সময়ই দরজায় তালা ঝুলে। যদি বন্ধই থাকে তাহলে এই লাইব্রেরি দিয়ে কী হবে? ক্লাসের পর লাইব্রেরি খোলা থাকলে হাতের কাছে বই পাওয়া যায়। লাইব্রেরিতে বই নিয়ে ভালো সময় কাটে। লাইব্রেরির এই ভগ্নদশায় আমরা পড়ালেখার সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আশা করি প্রাধ্যক্ষ শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান করবেন।
সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাদিউল ইসলাম বলেন, আমাদের হলে কোনো স্বতন্ত্র লাইব্রেরি নেই। রিডিং রুমে বইয়ের কয়েকটি আলমারি আছে। তাছাড়া সেখানে মানসম্মত কোনো বই নেই। আছে শুধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান আর তবলিগের কিছু বই। আমরা সেখান থেকে কোনো বই নিতে পারি না। অধিকাংশ সময়ই আলমারিগুলো তালাবদ্ধ থাকে। লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে কাউকে পড়তেও দেখিনি। এখানে তেমন কোনো বই-ই নেই যে আগ্রহ নিয়ে ছেলেরা পড়বে।
হলে স্বতন্ত্র লাইব্রেরি না থাকা প্রসঙ্গে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রধ্যক্ষ এ কে এম মাহমুদুল হক বলেন, হলটি দীর্ঘদিনের পুরোনো। অন্যান্য হলের তুলনায় এখানে জায়গা খুব কম। তাই আমরা আলাদাভাবে কোনো লাইব্রেরি করতে পারিনি। তাই রিডিং রুমের সঙ্গে লাইব্রেরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে সেখান থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। হলে আমরা ভালো মানের একটা লাইব্রেরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হলের লাইব্রেরি ছোট হলেও তাতে পর্যাপ্ত বই সংগ্রহের চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাশাপাশি এখানে বঙ্গবন্ধু কর্নার রয়েছে। বর্তমানে রিডিং রুমে জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। এজন্য দুটি আলাদা রিডিং রুম করা হচ্ছে। একটিতে চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করবেন এবং অন্যটিতে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনা করবেন।
বিষয় : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh