× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সন্তানের ছবি ফেসবুকে দিচ্ছেন? একবার ছবি পোস্ট করার পর সেটি কি পুরোপুরি মুছে ফেলা সম্ভব

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:১৬ এএম । আপডেটঃ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:১৭ এএম

বর্তমানে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ছবির অপব্যবহার ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি জানেন, শেয়ারেন্টিং কী?

মা-বাবারা প্রায়ই ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্তানের ছবি শেয়ার করেন। ‘প্যারেন্টিং’য়ের এই অংশটাকেই বলা হচ্ছে শেয়ারেন্টিং।

সন্তানের প্রথম দাঁড়ানো, প্রথম হাঁটা, প্রথম কথা বলা, চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ, স্কুলের পারফরম্যান্স, ছুটির দিন—এই মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করতে ভালোবাসেন অনেক বাবা–মা। তবে, একাধিক গবেষণা জানাচ্ছে, বাবা-মা অনলাইনে তাঁদের সন্তানের জীবন ও বিভিন্ন অর্জন ভারর্চুয়াল বন্ধুদের সঙ্গে যতটা শেয়ার করতে চান, ততটাই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

সন্তানের ছবি শেয়ার করার কিছু ইতিবাচক দিকও অবশ্য আছে। মা-বাবারা প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক গ্রুপ তৈরি করে থাকেন। 

অভিভাবকত্বের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শের জন্য একটা উত্তম স্থান হতে পারে অনলাইন। আবার সন্তানকে আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পরিচিত করানোর জন্যও এসব ছবি, ভিডিও একটা ভালো মাধ্যম। এ ছাড়া ইন্টারনেটে যত ছবি, ভিডিও আছে, এর ভেতর সন্তানের ছবি আর ভিডিওগুলোই আপনাকে দেয় নির্ভেজাল আনন্দ।

কিন্তু এর অন্ধকার দিকও আছে। প্রকটভাবে আছে। অন্যদের আনন্দ দেওয়ার পর ওই শিশু নিজেই নেতিবাচকতা, কটু কথা ও হিংসার শিকার হতে পারে।

বেশ কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সূর্যমুখী ফুলের একটা বাগানে পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান। সেখানে মেয়ের কয়েকটি ছবি তুলে নিজের ভেরিফায়েড ইনস্টাটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন। মুহূর্তেই ওই ছবির নিচে অসংখ্য মন্তব্য পড়তে থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি মন্তব্য ছিল বেশ খারাপ ইঙ্গিতপূর্ণ। এর আগে আরেক ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মুর্তজার মেয়ের ছবিতেও এমন আপত্তিকর মন্তব্য দেখা গিয়েছিল।

সন্তানের ব্যক্তিগত বিবরণ থাকে, এমন ছবিও অনেক বাবা-মা শেয়ার করে থাকেন। সন্তানের প্রাইভেসি আর নিরাপত্তা—গুরুত্বপূর্ণ এই দুই বিষয়ের জন্যই যা হুমকি। বড় হওয়ার পর সন্তানের জন্য বিব্রতকর হতে পারে, এমন অনেক কিছু ছোটবেলার ছবি আর ভিডিওতে থাকে। পাশাপাশি বর্তমানে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ছবির অপব্যবহার। একটা ছবি আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন মানে সেটা অনেকটা ‘পাবলিক প্রোপার্টি’। যে কেউ যেকোনোভাবে ছবিটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনি সেটা থামাতে পারবেন না।

ডিপ ফেক প্রযুক্তিতে যেকোনো মানুষের ছবি ব্যবহার করে আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া এখন খুব সহজ হয়ে গেছে। শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক সবার জন্যই যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ‘ভাবিয়া’ ফেসবুকে সন্তানের ছবি দেবেন।

ভবিষ্যৎ এসব ঝুঁকি বা বিড়ম্বনা এড়াতে কীভাবে নিজের সন্তানের ছবি অনলাইন থেকে মুছে ফেলবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আসলে কতটুকু মুছে ফেলা সম্ভব

ইন্টারনেটের দুনিয়া থেকে কোনো ব্যক্তির সব ছবি বা ভিডিও একেবারে মুছে ফেলা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে আপনি যদি জানেন ঠিক কোন ছবিগুলো মুছতে হবে, তাহলে ব্যাপারটা খানিকটা সহজ হয়ে যায়। তবে ছবিটা যদি অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটা মুছে ফেলা বেশ সময়সাপেক্ষ, কষ্টসাধ্য এমনকি প্রায় অসম্ভব কাজ। কারণ, বারবার শেয়ার করায় এই ছবি বা ভিডিওগুলো সবার হাতে হাতে চলে গেছে। এমনকি অন্ধকার নেট (ডার্ক ওয়েব) দুনিয়ায় চলে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। গুগল সার্চ থেকে সরিয়ে ফেললেও যে ওয়েবসাইট থেকে ছবিটি প্রচার হয়েছে, সেখানে থেকে যাবে।

গুগলের ছবি মুছবেন যেভাবে

আপনার সন্তানের পক্ষে আপনি নিজে কিংবা একজন দক্ষ আইন বিশেষজ্ঞের সাহায্যে গুগল সাপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে সন্তানের ছবি, ভিডিও বা ওই রকম কোনো কনটেন্ট থাকলে সরিয়ে ফেলতে আবেদন জানাবেন। গুগল সংবাদযোগ্য কোনো বিষয় বা জনস্বার্থে জড়িত কোনো ব্যাপার না থাকলে অনুরোধকৃত ছবি সার্চ রেজাল্ট থেকে সরিয়ে নেবে। তবে মূল সাইটে ছবিটি থেকেই যাবে।

ইউটিউব থেকে যেভাবে মুছবেন

আপনার সন্তানের কোনো ভিডিও যদি ইউটিউবে থাকে, তাহলে আপনি ইউটিউব সাপোর্ট ওয়েবসাইটে আবেদনের মাধ্যমে তা সরাতে পারবেন। ইউটিউব তার নীতিমালায় এআই সৃষ্ট বিভিন্ন অপশনের সঙ্গে বিভিন্ন ভাষাও যোগ করছে। ফলে ভিডিও অপসারণের অনুরোধ আপনার জন্য বেশ সহজও হয়ে গেছে।

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের ছবি মুছবেন যেভাবে

এই সামাজিক মাধ্যমগুলো শিশুর অভিভাবকদের ছবি অপসারণের আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুর আবেদন তাঁর অভিভাবক করতে পারবেন। তবে, ১৩ বছরের ঊর্ধ্বে হলে আবেদন শিশুর নিজেকেই করতে হবে।

টিকটক থেকে যেভাবে মুছবেন

টিকটক থেকে কম বয়সী কারও ভিডিও মুছতে হলে ব্যবহারকারী নিজেকে অথবা তার অভিভাবককে একটি প্রাইভেসি ফরম পূরণ করতে হবে। টিকটকে কম বয়সী কারও ভিডিও পোস্ট করা হলে কমিউনিটি নির্দেশিকা ভঙ্গ করা হয় না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কনটেন্ট হলে টিকটক তা সরিয়ে ফেলে।

ছবি প্রচার রোধে ভবিষ্যৎ করণীয়

আপনার সন্তানের ছবি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া আটকাতে নিজেকে সচেতন হতে হবে। যত্রতত্র ছবি শেয়ার না করাই ভালো। তবে একান্তই ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে হলে প্রাইভেসির ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করুন। সন্তানের চেহারা যাতে বোঝা না যায়, সে জন্য ব্লার (ঝাপসা) বা স্টিকার ব্যবহার করতে পারেন। ছবির ব্যাপ্তি নিজের কাছের, চেনা মানুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন।


সূত্র: রয়টার্স 


National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.