তীব্র কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসায় ঝুঁকি নিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ছবি: সংগৃহীত
সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ, যার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যোগাযোগ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কুয়াশার এই দাপট আরও অন্তত পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যেই সাত জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, যা জানুয়ারির শুরুতে আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কুয়াশার চাদরে স্থবির জনজীবন
গত কয়েকদিন ধরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। কুয়াশার কবলে পড়ে বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনা নদীতে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। ৪ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চালক মোশাররফ হোসেন জানান, এবারের কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পাতলা কাপড়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। সরকারি কম্বল বিতরণের আশায় দিন গুনছেন জাহানারা বেগমের মতো নিঃস্ব মানুষেরা।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, দেশের সাত জেলা—যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নীলফামারীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ২৬ ডিসেম্বর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় ৯.৬ এবং গোপালগঞ্জে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে। বিপরীতে সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, চারটি প্রধান কারণে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ছে: ১. অভ্যন্তরীণ জলাধার ও হাওর থেকে সৃষ্ট কুয়াশা। ২. বিকিরণজনিত কুয়াশা। ৩. পাহাড়ের ভাঁজে সৃষ্ট কুয়াশা। ৪. ভারত থেকে উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশ করা বায়ুতাড়িত কুয়াশা।
এই কুয়াশা মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করায় সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারছে না, ফলে হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের বুলেটিনে জানিয়েছে, ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকবে। দৃষ্টিসীমা কমে আসায় বিমান ও নৌ চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে শীতের প্রকোপ আরও বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
বিষয় : ঘন কুয়াশা আবহাওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তর
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
