আজ (২৭ নভেম্বর) বিকেলে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ২০ সেকেন্ডে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৬। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল এলাকায়। দিনের মধ্যে এটি ছিল তৃতীয় দফা ভূকম্পন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির এই ভূকম্পনটিকে 'স্বল্পমাত্রার' বলে উল্লেখ করেছেন। তবে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিন ঢাকার আগে ভোরে দেশের আরও দুটি স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়—সিলেট এবং কক্সবাজারের টেকনাফে। এর মধ্য দিয়ে গত এক সপ্তাহেরও কম সময়ে দেশে মোট ছয় দফা ভূমিকম্প অনুভূত হলো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই ভূমিকম্পের প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত শুক্র ও শনিবার প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে চারবার ভূমিকম্প হয়।
২১ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত হওয়া ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকা, যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে।
শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে সারাদেশে ১০ জন নিহত এবং ছয়শ'র বেশি মানুষ আহত হয় বলে জানা যায়।
বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হুমায়ুন আখতারের মতে, ২১ নভেম্বরের ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি ছিল "স্মরণকালের মধ্যে দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প"। তিনি বলেন, "ভূপৃষ্ঠে এত তীব্রতা এর আগে আমরা কখনো অনুভব করিনি। স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার নগরবাসী সাংঘাতিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।"
অধ্যাপক আখতার আরও উল্লেখ করেন যে, গত ছয়টি ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটিরই উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। এই এলাকাটি ভূতাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বার্মা প্লেট এবং ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল বা 'সাবডাকশন জোন'-এর অন্তর্ভুক্ত। তিনি নিশ্চিত করেন যে, আজ সিলেট ও টেকনাফে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পও এই বিশাল সাবডাকশন জোনেরই অংশ। ঘন ঘন এই অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়া একটি বড় ধরনের ভূ-তাত্ত্বিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।