× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

শৈত্যপ্রবাহ কী? এটি কখন আসে ও কতদিন থাকে

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:৫৩ এএম । আপডেটঃ ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪৬ এএম

শৈত্যপ্রবাহছবি

শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার পূর্বেই এবছর শীতের তীব্রতা প্রকট আকার ধারন করেছে। তবে এবারের শীতের প্রথম শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বাংলাদেশের পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।তবে তীব্রতা ১৮ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে না বলে মনে করেন  বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। এসময় সারাদেশে তাপমাত্রা সাড়ে সাত থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে বলে জানান তিনি।

কিন্তু এই শৈত্যপ্রবাহ কী? এটি কখন হয় এবং এর স্থায়িত্বই বা কতদিন ? বাংলাদেশের কোন অঞ্চল শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়? চলুন জেনে নিয়:-

শৈত্যপ্রবাহ কী:- বাংলাদেশে সাধারণত শীত পড়ে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসময় হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ঠাণ্ডা বাতাস উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে,ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। যদি এই তাপমাত্রা কমতে কমতে নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছায় তখন শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলে ধরে নেয়া হয়।

“আমাদের দেশে শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তাপমাত্রা যখন ১০ডিগ্রীর নিচে নেমে আসে, তখন তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলি”, বলেন আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

তাপমাত্রাভেদে শৈত্যপ্রবাহকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়:-

# তাপমাত্রা যদি আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তবে সেটাকে ধরা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। 

#তাপমাত্রা  কমে ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। 

#আর তাপমাত্রা চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেটাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।

#তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটা হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।

তবে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরতে হলে এই তাপমাত্রার স্থায়িত্বকাল অন্তত তিনদিন হতে হবে। অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেও তা যদি কমপক্ষে তিনদিন না থাকে তবে তা শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা যাবে না।

শৈত্যপ্রবাহ কখন আসে:- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে শুরু করে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়, বলেন বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ড. সমরেন্দ্র কর্মকার। “একটা শৈত্যপ্রবাহ আট থেকে ১০ দিন বা ১৫ দিন পর্যন্ত হতে পারে, বলেন বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ড. সমরেন্দ্র কর্মকার। শৈত্যপ্রবাহ তিন থেকে সাতদিন বা তার বেশিও দীর্ঘায়িত হতে পারে।

বছরে কতবার শৈত্যপ্রবাহ হবে তেমন কোন উপাত্ত না থাকলেও গড়ে ডিসেম্বর মাসে এক থেকে দুইটি, জানুয়ারি মাসে দুই থেকে তিনটি এবং ফেব্রুয়ারিতে একটি শৈত্যপ্রবাহ হয় বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ। কখনো কখনো একটি শৈত্যপ্রবাহই লম্বা সময় ধরে চলতে পারে।

বাংলাদেশের শৈত্যপ্রবাহ অঞ্চল:-

বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এলাকা মূলত শৈত্যপ্রবাহ প্রবণ। এগুলোর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডু, রাঙ্গামাটি অন্যতম শৈত্যপ্রবাহপ্রবণ অঞ্চল। 

এছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চল, যেমন- গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল অঞ্চলেও শৈত্যপ্রবাহ হয়ে থাকে।

শীতকালে বাংলাদেশে যে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয় তা ভারতের দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

কুয়াশা হলেই কি শৈত্যপ্রবাহ :শীতকালের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো কুয়াশা। এসময় কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে যাওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যায়।তবে কুয়াশার সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই বলে জানান আবহাওয়াবিদ ড. সমরেন্দ্র কর্মকার। বরং কুয়াশা পড়লে তাপমাত্রা সাধারণত ১০ডিগ্রির ওপরে থাকে বলে জানান তিনি। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসলে কুয়াশা সৃষ্টি হয় আর মানুষের শীত লাগে। কিন্তু সংজ্ঞানুসারে সেটাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা যায় না।

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ, রংপুর এবং রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যথাক্রমে ১১.৭, ১২.৩ এবং ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে এসময় অঞ্চলগুলোতে কুয়াশা দেখা গেলেও সেখানে শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে, তেমনটা বলা যাবে না।

দার্জিলিংয়ে তুষারপাত হলে বাংলাদেশে তাপমাত্রা কি কমতে পারে:- দার্জিলিং বাংলাদেশের উত্তর-পচিমাঞ্চলে থাকায় সেখানে তুষারপাত শুরু হলে বাংলাদেশে তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। কিন্তু সেটা খুব বেশি কমে যাওয়ারও শঙ্কা নেই বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।


National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.