সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আয়োজিত হলো বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান উৎস সন্ধ্যা ২০২৫। দেশের জনপ্রিয় দুই শিল্পী বাপ্পা মজুমদার ও সোমনুর মনির কোনাল-এর মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় গত ২১ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগের শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। এবারই প্রথমবারের মতো মঞ্চে একসাথে গান গাইলেন এই দুই তারকা। সঙ্গীতপ্রেমীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আয়োজনটি পরিণত হয় এক সফল জনসমুদ্রে।

এই বিশেষ সন্ধ্যায় বাপ্পা মজুমদার তাঁর ব্যান্ড 'দলছুট'-কে সঙ্গে নিয়ে শুরুতেই পরিবেশন করেন জনপ্রিয় গান 'বৃষ্টি পড়ে', এরপর গেয়ে শোনান 'দিন বাড়ি যায়'-এর মতো কালজয়ী গান। অন্যদিকে, কোনাল শুরু করেন 'প্রিয়তমা' চলচ্চিত্রের টাইটেল গান দিয়ে।

দুই শিল্পী একক ও যুগল পরিবেশনায় প্রায় ১৫টিরও বেশি গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন। বাপ্পার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ছিল 'পরী', 'বাজি' এবং 'তোমাকেই বলে দেব', আর কোনাল পরিবেশন করেন 'রাজকুমার', 'বসন্ত চলে যায়' ও 'ঘুম জড়ানো'-এর মতো জনপ্রিয় ট্র্যাক। কোনাল আরও গেয়ে শোনান জোয়ান বায়েজের কালজয়ী গান 'সং অব বাংলাদেশ', যা দর্শকদের মধ্যে আবেগ সৃষ্টি করে।

যুগল পরিবেশনায় ছিল:

• 'একটু যদি তাকাও তুমি'

• 'চোখের ভিতর স্বপ্ন'

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করার সুযোগ পাওয়ায় দুই শিল্পীই মঞ্চে দাঁড়িয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এই আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা উৎস বাংলাদেশ, যারা দীর্ঘ বত্রিশ বছর ধরে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে কাজ করছে। অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত অর্থের পুরোটা ব্যয় করা হবে সংস্থাটির মানবকল্যাণমূলক কাজে।

সংস্থাটি বর্তমানে তাদের দু’টি স্কুল এবং ঢাকার বিভিন্ন বস্তিতে অবস্থিত আটটি ‘আস্থা’ ডে-কেয়ার সেন্টারের পাঁচ শতাধিক শিশু ও কিশোরদের সহায়তায় এই তহবিল ব্যবহার করবে।

উৎস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মাহবুবা আকতার মাহমুদ লীনা এই প্রসঙ্গে বলেন, "বত্রিশ বছর আগে মাত্র তিনটি শিশুকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে উৎস। আমাদের লক্ষ্য এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি শিশু আনন্দময়, নিরাপদ এবং সুস্থ পরিবেশে বেড়ে উঠবে। যেখানে কোনো শিশুকে রাস্তায় বড় হতে হবে না।"

এই মহতী আয়োজনে প্রধান সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখে ওয়ান বাংলাদেশ। এছাড়া কো-স্পন্সর ও অন্যান্য অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মতো।

কো-স্পন্সর ছিল: এএমসি নিট কম্পোজিট, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান ইনার হুইল ক্লাব, ম্যাক লুব্রিকেন্ট, পোলার আইসক্রিম, শক্তি ফাউন্ডেশন ও ঊর্মি গ্রুপ।

এছাড়াও এবিসি রিয়েল এস্টেট, সিটি ব্যাংক, ডিবিএল গ্রুপ, ইস্টার্ন ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, মাস্টারকার্ড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নভোএয়ার, প্রাইম ব্যাংকসহ উৎস বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী প্রায় ত্রিশটিরও বেশি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এই উদ্যোগে অংশ নেয়। ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে ছিল এশিয়াটিক ইএক্সপি ও মঙ্গলদ্বীপ ফাউন্ডেশন।