পুলিশের সন্দেহ, হামলাকারী বা হামলকারীরা আগেই সাইফের বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন এবং ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। কোলাজ
বুধবার মধ্যরাতে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এই অভিনেতা। ঘটনার তদন্তে একটি বিশেষ দল গঠন করেছে পুলিশ। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তারা। আর সেখানে ঘটনা নিয়েছে নতুন মোড়। হামলার দুই ঘণ্টা আগের ফুটেজে অভিনেতার বাড়িতে কারও প্রবেশের দৃশ্য ধরা পড়েনি, অর্থাৎ সাইফের ওপর হামলাকারীরা অনেক আগেই বাড়িতে লুকিয়ে হামলার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এ হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।
এ হামলার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছে পুলিশ। তবে সিসিটিভি ফুটেজে মধ্যরাতের পর কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি অভিনেতার বাড়িতে। পুলিশের সন্দেহ, হামলাকারী বা হামলকারীরা আগেই সাইফের বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন এবং ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখা গেছে, এক ব্যক্তিকে রাত ২টা ৩৩ মিনিটে সাইফ আলী খানের বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা গেছে। ওই ব্যক্তি আবার তাকাচ্ছে সিসিটিভির দিকেও। সেই ব্যক্তির পরনে সাদা কলার দেওয়া টি-শার্ট। গলার কাছে ঝুলছে গামছা বা তোয়ালেজাতীয় কিছু। পরনে আছে জিনস। কাঁধে রয়েছে ব্যাগও।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরতে মাঠে নেমেছে মুম্বাই পুলিশের ১০টি টিম। শিগগিরই ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশা করছে পুলিশ। এ হামলার নেপথ্যে শুধুই ডাকাতি, নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এরই মধ্যে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফিল্মফেয়ারসহ ভারতের একাধিক প্রথম সারির দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্রথমে সাইফ-কারিনার ঘরে নয়, হামলাকারীরা ঢুকেছিল তাঁদের সন্তান জাহাঙ্গীর ও তৈমুরের ঘরেই। তাদের ন্যানি, অর্থাৎ পরিচারিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই জেহর ঘরে ঢুকে পড়ে অজ্ঞাতপরিচয় সেই ব্যক্তি। পরিচারিকা জানান, ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। সেই চিৎকার শুনতে পেয়েই হাজির হন সাইফ। সন্তানদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন।
পরিচারিকা লিমাকে সন্দেহের আওতায় বাইরে রাখছে না তদন্তকারী দল। পরিচারিকা কি নিজেই এ ঘটনায় জড়িত? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। যেহেতু কোনো ভাঙচুরের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তাই পুলিশের সন্দেহ যে পরিচারিকাই, দুষ্কৃতকারীকে সাহায্য করে থাকতে পারেন। সুস্থ হতেই পরিচারিকার বক্তব্য রেকর্ডও করা হবে।
গতকাল বুধবার মধ্যরাতে বান্দ্রার বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন সাইফ আলী খানসহ পরিবারের সবাই। এ সময় এক বা একাধিক দুর্বৃত্ত ঢুকে পড়ে।
সে সময় দুর্বৃত্তরা একাধিকবার সাইফকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে লীলাবতী হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী নীরজ উত্তমণি জানিয়েছেন, সাইফের শরীরে ছয়টি আঘাত রয়েছে, যার মধ্যে দুটি বেশ গভীর। একটি আঘাত তাঁর মেরুদণ্ডের কাছাকাছি। অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে।
এদিকে তারকাদের আবাসিক এলাকাখ্যাত বান্দ্রায় এ হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলো। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিশের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাঁরা। তারকারা যেখানে নিরাপদ নন, সেখানে পুরো শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
বিষয় : অভিনয় শিল্পী সাইফ আলী খান হিন্দি সিনেমা
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh