টানা বৃষ্টিতে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ঢোকা পানি বালতি আর ড্রামে করে বের করছেন ব্যবসায়ীরা| ছবি—সংগৃহীত
আষাঢ়ের শেষে শুক্রবার টানা ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা তলানোর পাশাপাশি মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটেও ঢুকেছে পানি; তাতে সারি সারি করে রাখা চাল, চিনি আর ডালের বস্তা ডুবে গেছে শত শত।
মার্কেটটি রাস্তা থেকে খানিকটা নিচুতে। পানি প্রবেশ ঠেকাতে এর গলির মুখগুলো উঁচু করে দেওয়া। তবে শুক্রবারের টানা বৃষ্টি এসবের কিছুই মানেনি।
দুপুরের দিকে এ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, বালতি আর ড্রাম নিয়ে মার্কেটের পানি বের করছেন ব্যবসায়ীরা। পানি আটকাতে গলির মুখে পেপার ও বস্তা দিয়ে আরও উঁচু করে দিয়েছেন। বিক্রি বন্ধ রেখে চাল-ডালের বস্তা বাঁচাতেই ব্যস্ত তারা।
কৃষি মার্কেটের চালের আড়তের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, এ মার্কেটে পাইকারি পণ্যের দোকান আছে দুইশর মত। এর মধ্যে শতাধিক দোকানের চাল, ডাল, চিনি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি নয় থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু কৃষি মার্কেট নয়, আশপাশের অনেকর ঘরবাড়ি, রাস্তা সব পানিতে ডুবে গেছে।”
কৃষি মার্কেটে মেসার্স লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজের মালিক মনোরজ্জন বসাক তার এক কর্মচারীকে নিয়ে ভেজা বস্তাগুলো বের করছিলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ভাই প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যে আছি। একটু বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে। প্রত্যেক সারির নিচের দুইটা, তিনটা করে বস্তা ভিজে যায়।”
মহানগর এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা মো. ইয়াছিনকে দেখা গেল ধানের কুড়া ছিটাতে। বললেন, “আমার অন্তত ৩০০ বস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে লাভটুকু করি, তা বৃষ্টির কারণে শেষ হয়ে যায়।”
আশরাফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধীকারী মোহাম্মদ মতিউর রহমান জানান, তার ‘প্রায় দুই লাখ টাকার’ চালের ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছর একই অবস্থা হয়। গত বছর বেশ ক্ষয়ক্ষতির পর কিছুটা উন্নয়ন করা হলেও, যে রকম উন্নয়ন দরকার ছিল সেরকম হয়নি।
বরিশাল রাউস এজেন্সির বিক্রেতা জিল্লাল হোসেন বলেন, “মূলত মার্কেট আরও উঁচু করতে হবে। প্রায় ৫ হাজারের উপরে বস্তা ডুবছে। যেগুলো একেবারে ডুবে গেছে, সেগুলো একদিনও রাখা যায় না। চাল একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।”
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। পরে তারা দোকানের সামনের অংশ ও মার্কেটের প্রবেশমুখ উঁচু করেন। কিন্তু রাস্তার তুলনায় মার্কেট নিচুতে হওয়ায় এবারও তা কাজে আসেনি।
এমন পরিস্থিতির জন্য ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে দায়ী করলেন কৃষি মার্কেটের চালের আড়তের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মনিরুল ইসলাম মন্টু।
তার ভাষ্য, “তাদের অবহেলার জন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন যদি এখন মার্কেটের ভেতরের রাস্তাটা উঁচু এবং ড্রেইনেজ লাইন সম্প্রসারণ করত ও পরিষ্কার রাখত, তাহলে ব্যবসায়ীদের এই বিপদ হত না।
“আমাদের এই এলাকা থেকে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী হইল। উনি বলেছিলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক করবেন। কিন্তু পরে আর কোনো খোঁজ নাই।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh