ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা রাখাইন রাজ্যের মংডুতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত এখনো চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে নতুন করে মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। এর ফলে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। এতে ওপারের বেশ কিছু সীমান্ত চৌকি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দখলে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের টেকনাফের নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, কুলালপাড়া, খাংগার ডেইল, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাংয়ের মগপাড়া, আছারবনিয়া, ডেগিল্ল্যা বিল, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ায় মর্টারশেল ও বোমার বিকট শব্দ শোনা যায় বলে সীমান্তের বাসিন্দারা জানান। এর ফলে আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, মিয়ানমারের সংঘর্ষ দীর্ঘদিনের। তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে শাহপরীর দ্বীপে গোলাগুলি ও তীব্র বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা খুব ভয় পাচ্ছেন।
নাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, রাখাইনে বিমান হামলার শব্দ শুনেছি। হামলার বিকট শব্দ টেকনাফ সীমান্ত ভেসে আসছে।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে গ্রাম খালি করতে মিয়ানমারে মাইকিং করা হচ্ছে। অনেকে সরে না যাওয়ায় যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। গইন্যাপাড়া ও গজ্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী।
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলেও সীমান্তের ওপারে মংডুতে যুদ্ধবিমানে হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটছেন। অনেকে আবার এপারে আসতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শুনেছি।
রাখাইনে চলমান সংঘাতের কারণে নতুন করে বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বিজিবি।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি চলছে। এ কারণে এপারে বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সীমান্তবর্তী লোকজনের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে যাতে কোনও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে না পারে সেজন্য সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ওপারে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। গোলার শব্দে সীমান্তের মানুষরা যাতে নির্ভয়ে থাকেন, সেজন্য সীমান্তের বসবাসকারীদের খোঁজখবর রাখছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh