ছায়েদ মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
সিলেটে ওসমানীনগরে শ্বশুরবাড়ি থেকে ছায়েদ মিয়া (৫২) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই কক্ষ থেকে নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তার পলিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মরহুম মতিন মিয়ার বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ছায়েদ উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের জহিরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ছত্তারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ছায়েদ মিয়া সাত বছর ধরে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। প্রায় ১০ বছর আগে তিনি কামারগাঁও গ্রামের মৃত মতিন মিয়ার মেয়ে শাহানাকে বিয়ে করেন। তাদের তিনটি কন্যা সন্তান রাইসা (৮), ফাইজা (৭) ও হাফিজা (৫) রয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) রাতে ছোট মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে এককক্ষে ছায়েদ ঘুমাতে যান। পাশের কক্ষে দুই সন্তান নিয়ে তার শাশুড়ি ঘুমাচ্ছিলেন। ভোরে গলা ও পেট কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় ছায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত তার স্ত্রী শাহানাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের শাশুড়ি সৈয়দা বেগম দাবি, গভীর রাতে ধারালো অস্ত্র দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে আহত করার পর নিজের গলা ও পেট কেটে ছায়েদ আত্মহত্যা করেছেন।
তার দাবি, বিয়ের পর থেকেই জামাই তার মেয়ের সাথে প্রায়ই ঝগড়া হত। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা তাদের ঝগড়া আপস নিষ্পত্তি করে দিতেন। ভোর ৪টার দিকে চিৎকার শুনে তিনি গিয়ে গলা ও পেট কাটা অবস্থায় জামাতার নিথর দেহ এবং পেট ও কান কাটা অবস্থায় মেয়ে পলিকে দেখতে পান। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। একই হাসপাতালে নিহতের স্ত্রী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে নিজে নিজে পেট কেটে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পর গলা কেটে কীভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে কারণে ঘটনাটি রহস্য তৈরি করলেও পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। ভোরে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার পর তাকে হত্যাচেষ্টা করে নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তার শাশুড়ি ও দুই মেয়ে এবং আহত স্ত্রীর দেওয়া এমন বক্তব্য পুলিশ রেকর্ড করেছে।
নিহতের শাশুড়ি সৈয়দা বেগম বলেন, চিৎকার শুনে ঘরে ঢুকে দেখি অন্ধকার। লাইট নিয়ে গিয়ে দেখি মেয়ের জামাইয়ের গলা ও পেট কাটা অবস্থায় নিথর দেহ পড়ে আছে এবং মেয়ের অবস্থাও গুরুতর।
নিহতের ছোট ভাই জুয়েল মিয়া বলেন, প্রায় সাত বছর ধরে তার ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যাই। মর্মান্তিক এ ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, তা আন্দাজ করতে পারছি না।
সুরতহাল প্রতিবেদক প্রস্তুতকারী ওসমানীনগর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সুবিনয় বৈদ্য বলেন, মরদেহের গলায় অন্তত ৮ ইঞ্চি কাটা রয়েছে। পেটের কাটা অংশ দিয়ে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক এমন তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের শাশুড়ি ও মেয়েদের বক্তব্য মতে, ভোর ৪টার দিকে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখতে পান পেট কাটা এবং দা দিয়ে গলা কাটা অবস্থায় ছায়েদ মিয়ার মরদেহ পড়ে রয়েছে। তার স্ত্রীও রক্তাক্ত। কেবল নিহতের শাশুড়ি, স্ত্রী-সন্তানদের কথামতে, ছায়েদ মিয়া আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিষয় : শ্বশুরবাড়ি মিলল লাশ জামাই স্ত্রী
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh