ছবি: সংগৃহীত
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জিয়াউল আহসান ফুয়াদ হত্যার জট খুলতে শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডের ৬ মাস পর হত্যায় অংশ নেওয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র।
গ্রেপ্তার মিজানুর রহমানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সহযোগীকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যায় অংশ নেন তিনি। তাদের ভাড়া করেন ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রবিন হোসেন রফিক।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ আলী। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর অপরাধী শনাক্তে আমরা কাজ শুরু করি। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কিছু সূত্র পাই। তাদের স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে জিয়াউল আহসান ফুয়াদ হত্যায় সরাসরি অংশ নেন পার্শ্ববর্তী কুশঙ্গল ইউনিয়নের আইয়ুব আলীর ছেলে মিজানুর রহমান। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় অংশ নেওয়া আরেকজনের বিস্তারিত আমরা পেয়েছি। তাকে গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সমর্থন আর পারিবারিক বিরোধ নিয়ে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জিয়াউল আহসান ফুয়াদের সঙ্গে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী জেসমিন আক্তারের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধে ইউনিয়নের মেম্বার রবিন হোসেন রফিক চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ শুরু করেন। বিরোধের একপর্যায়ে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খুনিদের ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করা হয়। ৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে জিয়াউল আহসান ফুয়াদ বাড়ি ফেরার পথে নিজ গ্রামের চৌদ্দবুড়িয়া মসজিদ সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ঘাতকরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, বাড়ি ফেরার পথে গতিরোধ করে তার সহযোগী জিয়াউল আহসান ফুয়াদের কোমর জাপটে ধরে। এ সময় দা দিয়ে উপুর্যপরি কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করেন মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমানের দায়ের কোপে তার সহযোগী খুনিও আহত হয়। ওই রাতেই সে বরিশালের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এলাকা ছাড়ে।
এ ঘটনায় ৮ জানুয়ারি রাতে নিহত ফুয়াদের বড় ভাই ফয়সাল কাজী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে ১১ ফেব্রুয়ারি সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ১২ মার্চ সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রফিকুল ইসলাম হাওলাদারকে ভৈরবপাশা ইউনিয়নের বিসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় চৌদ্দবুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী শাহাদাত হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ২৯ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জেসমিন আক্তারকে।
ইউপি সদস্য রবিন হোসেন রফিক বলেন, নিহত ফুয়াদ কাজীর সঙ্গে আমাদের সর্ম্পক স্বাভাবিক ছিল। আমি এর সঙ্গে কোনো অংশেই জড়িত নই। শুধু শুধু হয়রানি করতে এ ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী জেসমিন আক্তার বলেন, আমি ২৬ মে জামিনে বের হয়েছি। মামলাটিতে আমাকে সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আমি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। আমি তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আমার ভাগ্যে লেখা ছিল তাই জেল খেটেছি।
বিষয় : নলছিটি ঝালকাঠি স্বোচ্ছাসেবক লীগ ফুয়াদ হত্যা মিজানুর
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
