ছবি: সংগৃহীত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের চার উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জেও বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে। এবার দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীতেও বাড়ছে পানি। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের।
পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানিতে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদী তীরবর্তী চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে তীরবর্তী মানুষের। কুড়িগ্রামে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে পাউবো জানায়, ধরলা নদীর পানি বেড়ে তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার এবং পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানিও সেতু পয়েন্টে বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী ও নুনখাওয়া পয়েন্ট বাড়ছে।
নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিরপুর উপজেলার ১৫টি পয়েন্ট দেখা দিয়েছে ভাঙন। অন্যদিকে গতকাল রাত থেকে কুড়িগ্রাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। দুধকুমার নদের পাড়ের বাসিন্দা সাজু জানান, যে হারে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে দুই এক দিনের মধ্যে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাবে। বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় আছি।
রাজারহাট তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা জাফর বলেন, ‘নদীর পানি খুব বেড়েছে। চরের অনেক বাদাম ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।’ রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার উত্তর দিকে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েকদিন এ প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি, পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি এবং তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্ট ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে উজানের ঢলে রংপুরে তিস্তা নদীর পানি হু-হু করে বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতে করে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরের কিছু ফসল জমি ও ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। বন্যা মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে উজানে মাঝারি, ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তাই নদীপাড়ের মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়ছে। উজানের পানির চাপের কারণে তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্ষার শুরুতেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষদের মাঝে বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
টেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, বন্যা হলে নদীপাড়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি নদীর তীরবর্তী আবাদি জমিগুলো তলিয়ে গিয়ে উৎপাদনের সময় বাদাম ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হবে। এমন আশঙ্কার কথা জানান বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলীও।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh