ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বরগুনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি প্রবেশসহ ঝড়ো হাওয়ায় ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। এতে তিন শতাধিক গ্রামের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) থেকে বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়তে শুরু করে। পরে রোববার মধ্যরাত থেকে রেমালের তাণ্ডব শুরু হয়ে চলে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ সময় প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণে জেলার বিভিন্ন সড়ক ও নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়। ঝড়ো হাওয়ায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পুরো জেলা। বিধ্বস্ত হয় কয়েক হাজার মানুষের বসতবাড়ি। পানির নিচে তলিয়ে যায় মাছের ঘের ও ফসলি জমি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এদের মধ্যে ৩৭ জন আহত হন। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের পরে ঘরের ওপর পড়া গাছ সরাতে গিয়ে ১ জন নিহত হন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলায় ৩ হাজার ৩৭৪টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ১৩ হাজার ৩৪টি ঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বরগুনা সদর উপজেলাসহ মোট ৫টি উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নের ১৩টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক গ্রাম। ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৪ হাজার ১৫৭ হেক্টর জলাশয়ের মাছ ও চিংড়ির ঘের।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে বরগুনার ৪২টি ইউনিয়নেই মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা সঠিক সময়ে মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠাতে পেরেছি। এ কারণে ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে কেউ নিহতের ঘটনা ঘটেনি। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে এসব মানুষ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরে তাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সরকারিভাবে যে ত্রাণ ও সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।