চাঁদরাতে কেনাকাটা করতে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। নিউমার্কেট, চট্টগ্রাম, ১০ এপ্রিল। ছবি: সংগৃহীত
দম ফেলার ফুরসত নেই জুতার দোকানি সেলিম উদ্দিনের। চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতে ভাসমান জুতার দোকান তাঁর। সেখানে একের পর এক ক্রেতা আসছেন। কেউ জুতা পছন্দ করছেন। পছন্দ হলে করছেন দরদাম। এসব সামাল দিতে গিয়ে কথা বলার সুযোগই পাচ্ছেন না তিনি। তাঁর দোকানের দুই কর্মীকেও সামাল দিতে হচ্ছে ক্রেতার চাপ।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই দৃশ্য দেখা যায়। শুধু সেলিম উদ্দিন নন, তাঁর মতো একই অবস্থা আশপাশের অন্য দোকানিদেরও। সবখানে ক্রেতাদের ভিড়। সবাই চাঁদরাতে কেনাকাটা করতে এসেছেন।
বেচাবিক্রির এক ফাঁকে কথা হয় সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার শুরুতে দোকান বসাতে পারেননি। পরে বসালেও বেচাবিক্রি কম ছিল। তবে গত দু-তিন দিন বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। এই রাতেও কম হবে না। এই রাতের জন্য বসে থাকেন তাঁরা। এখানে যাঁরা কেনাকাটা করতে আসেন, তাঁদের হাতে টাকা আসে শেষ মুহূর্তে। তাই ক্রেতাদের ভিড়ও থাকে শেষ দিকে। বিশেষ করে চাঁদরাতে তো দম ফেলার সময়ও পান না।
ঈদের আগের দিন চাঁদরাতে প্রতিবারই এমন ভিড় সামাল দিতে হয় এই দোকানিদের। তাই চাপ থাকলেও তাতে অভ্যস্ত তাঁরা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
নিউমার্কেট এলাকায় সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে ভাসমান দোকানগুলোতে হাজার হাজার মানুষ। প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনে উপচে পড়া ভিড়। মানুষের চাপে সড়কে গাড়ি চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে।
তবে এবার ঈদে এসব দোকান বসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। কেননা রোজার আগে এসব দোকান উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন। অবশ্য রোজা শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে দোকান বসাতে শুরু করেন দোকানিরা। শেষ পর্যন্ত তা জমেও ওঠে।
ঈদের আগের দিন চাঁদরাতে চট্টগ্রাম নিউমার্কেটে প্রতিবারই এমন ভিড় সামাল দিতে হয় এই দোকানিদের।
নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতের দোকানে কী নেই? জামাকাপড়, জুতা, বেল্ট, টুপি, ঘড়ি, চশমা, ফলমূলসহ প্রায় সব জিনিস পাওয়া যায় এখানে। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় স্বল্প আয়ের লোকজন এখান থেকে কেনাকাটা করেন বেশি। আবার অন্যরাও আসেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে।
ইফতারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বের হতে শুরু করেন লোকজন। সামর্থ্য অনুযায়ী যে যাঁর মতো করে কেনাকাটা করেন এ দিন।
নগরের হালিশহর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন চাকরিজীবী মোহাম্মদ সানোয়ার। তিনি বলেন, ঈদের পাঞ্জাবি আগেই কিনেছেন। জুতা কিনতে হবে। তবে কেনাকাটার চেয়ে এখানে আসতে ভালো লাগে। চাঁদরাতের আগে প্রতিবছরই বন্ধুদের নিয়ে চলে আসেন।
একই কথা বলেন নগরের বাকলিয়া থেকে আসা হাসান আহমেদ। তিনি বলেন, সব কেনা হলেও টুপি কেনা হয়নি। এক ফাঁকে টুপি কিনে নেবেন। আর বন্ধুদের নিয়ে হকার মার্কেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেটে যাবেন।
বেচাবিক্রির এক ফাঁকে কথা হয় বেল্টের দোকানি ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁদের ব্যবসার মূল মৌসুমই হচ্ছে ঈদের সময়। সারা বছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বিশেষ করে ঈদের আগের দিন চাঁদরাতে তাঁদের বেশ ভালো বেচাকেনা হয়। এই বেচাকেনা চলবে ভোর পর্যন্ত।
পাশেই পৌর জহুর হকার্স মার্কেট। সেখানেও কেনাকাটা করতে আসা মানুষের ভিড় লেগে আছে সন্ধ্যার পর থেকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh