জান্নাতুন (৩০) নামের গর্ভবতী এক নারী আন্তনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও তালশহর এলাকার মাঝামাঝি আসলে হঠাৎ প্রসব বেদনা শুরু হয়। পরে সেখানেই ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
তারপর রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সহায়তায় ওই প্রসূতিকে পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে নামিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। জান্নাতুন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকার বাসিন্দা ইকবাল মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ড’ বগিতে ছিলেন ইকবাল-জান্নাতুন দম্পতি। ট্রেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন অতিক্রম করার পর জান্নাতুনের প্রসববেদনা ওঠে। ট্রেনটি আশুগঞ্জ স্টেশন অতিক্রম করার পরপরই বগিতে থাকা এক নারী চিকিৎসকের সহায়তায় একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি।
ট্রেনের কর্মকর্তারা বিষয়টি রেলওয়ের কন্ট্রোল রুমে জানালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে ট্রেনটির যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার জসিম উদ্দিনসহ নিরাপত্তাকর্মীরা প্রসূতি ও তাঁর স্বামীকে গ্রহণ করেন। পরে তাঁদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়।
নবজাতকের বাবা ইকবাল মিয়া বলেন, ‘প্রসববেদনা ওঠার পর ভাগ্যিস বগিতে একজন মহিলা চিকিৎসক ছিলেন। ট্রেনেই আমার স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিয়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি ওয়ার্ডের জ্যেষ্ঠ নার্স স্মৃতি রানী রায় ও মর্জিনা আক্তার বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই প্রসূতি হাসপাতালে আসেন। নবজাতকের নাভিতে কর্টক্লিপের পরিবর্তে মাথার চুলের ক্লিপ লাগানো ছিল। এতে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
পরে ইনজেকশন দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। শিশুর ওজন তিন কেজি। প্রাথমিক অবস্থায় নবজাতকসহ মায়ের জরুরি ও প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে। পৌনে আটটার দিকে তাঁরা হাসপাতাল থেকে চলে যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার জসিম উদ্দিন বলেন, ট্রেনে এক প্রসূতি মা একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ট্রেন ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশন অতিক্রম করার পর প্রসূতির প্রসববেদনা ওঠে। পরে ট্রেনেই তিনি সন্তানের জন্ম দেন।