গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ।
৪ দিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হল। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আজিজুল হক নামে একজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আরো ২৪ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । তাদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর শংকর পাল জানান, রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় আরিফুল ইসলাম নামের ৩৮ বছর বয়সী এক জনের মৃত্যু হয়। সকাল পৌনে ৭টায় মারা যান ২৫ বছর বয়সী মহিদুল খান। তারা দুজনই আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। আরিফুলের পোড়ার মাত্রা ছিল ৭০ শতাংশ, মহিদুলের ৯৫ শতাংশ।
আরিফুলের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার আয়রন ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। মহিদুল সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর বেড়াকোলা খাপারা গ্রামের ছাবেদ খানের ছেলে। তিনি গার্মেন্ট কারখানার জুট গোডাউনের শ্রমিক ছিলেন। ২ জনই টপস্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
সেদিনের আগুনে মহিদুলের স্ত্রী নার্গিসও (২২) দগ্ধ হন। ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নার্গিস এখনো চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, যে বাসায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে গ্যাস বের হতে থাকা গরম সিলিন্ডার ভেজা চট দিয়ে মুড়িয়ে বাইরে রেখে যান পরিবারের কেউ একজন। স্থানীয়দের অনেকে কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন কী হচ্ছে সেটা দেখতে। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে যে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তা বুঝতে পারেনি কেউ। সে সময় পাশের আরেকটি বাসায় চুলা ধরাতে গেলে পুরো রাস্তায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই দগ্ধ হয় সবাই।
ওই ঘটনার পর মারাত্মকভাবে দগ্ধ ৩২ জনকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে দগ্ধদের মধ্যে ২৪ জন এখন ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রসঙ্গত, বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগে আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায়।