সোমালিয়ার জলদস্যুরা আমাদের জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমাদের সবাইকে একটি কক্ষে আটকে রেখে সবার হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে যাচ্ছে। এটাই হয়তো আমার শেষ কথা।'
ভারত মহাসাগরে জলদস্যু কবলিত জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর মেশিন ওয়েলার আলী হোসেন গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় তার বাবা ইমাম হোসেনকে ফোনে এ কথা বলছিলেন।
এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি আলী।
গতকাল ভারত মহাসাগরে কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে সোমালি জলদস্যুরা।
‘জলদস্যুরা জাহাজে উঠছে, বেঁচে থাকলে দেখা হবে’
আজ বুধবার ওই জাহাজের ক্রু আলী হোসেনের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমরের পাড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
আলীর বাবা ইমাম হোসেন বলেন, 'গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ ফোন করে আলী হোসেন জানায় একদল জলদস্যু তাদের সবাইকে একটি কক্ষে মুক্তিপণের জন্য আটকে রেখেছে। তারা ক্যাপ্টেনকে দিয়ে জাহাজটিকে উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে। জাহাজে তারা সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নিচ্ছে। সে বলল এটাই হয়তো তার শেষ কথা।'
তিন মাস আগে সবশেষ বাড়িতে এসেছিলেন আলী হোসেন।
‘সোমালি দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি, সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে চেষ্টা চলছে’
বিশারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, আলী হোসেন খু্বই শান্ত প্রকৃতির এবং খুব মেধাবী। ২০১৪ সালে তিনি স্থানীয় ইউবিসি স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে নারায়ণগঞ্জ মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন।
আলীর বাবা ইমাম হোসেন ইউবিসি স্কুলের দপ্তরি। তার দুই সন্তানের মধ্যে আলী হোসেন ছোট।
ইমাম হোসেন জানান, 'মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ইফতারির পরে হঠাৎ আলী হোসেনের ফোন পাই। শুধু আমার সঙ্গে নয়, ছেলে তার মা ও স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছে।'
পরিবারের সদস্যরা জানান, কবির গ্রুপের পক্ষ থেকে জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে। পরিবারের কাছে মুক্তিপণ না চাইলেও সরকারের কাছে ৫৫ কোটি টাকা দাবি করেছে বলে তারা শুনেছেন।
বানারীপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এখন পর্যন্ত মুক্তিপণের বিষয়টি জানি না। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।'