ফাইল ছবি
রাজশাহীর তানোরে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলা সদরের শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার পর তালন্দ ইউনিয়নের বিলশহর গ্রামে খুন হন আওয়ামী লীগ কর্মী জিয়ারুল হক (৩৬)।
আজ ভোরে গ্রামের একটি সড়কের প্রান্ত থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য জিয়ারুলের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে তানোর উপজেলা সদরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে করে পাঁচ কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়ি বিলশহর গ্রামের দিকে চলে যান জিয়ারুল। বুধবার ভোরের দিকে পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়া লোকজন সড়কের পার্শ্ববর্তী একটি জায়গায় জিয়ারুলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। সকাল ৮টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিয়ারুলের মরদেহ উদ্ধার করে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জিয়ারুলকে শক্ত কোনো বস্তু দিয়ে প্রথমে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। এরপর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করার পর পেটে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। অন্য কোথাও হত্যা করে জিয়ারুলের মরদেহ বিলশহর গ্রামের উত্তরপ্রান্তে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা গেছে, নিহত জিয়ারুল হক তালন্দ ইউনিয়নের বিলশহর গ্রামের মোহর আলি ছেলে। জিয়ারুল রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীর চাচাতো ভাই।
গোলাম রাব্বানী অভিযোগে বলেছেন, গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে জিয়ারুল তার পক্ষে ব্যাপকভাবে কাজ করেন। ওই নির্বাচনে জিয়ারুলের ব্যাপক ভূমিকার কারণে লালপুর স্কুল ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁচি প্রতীক, নৌকা প্রতীকের চেয়ে ছয় শতাধিক ভোট বেশি পেয়েছিল। ভোটের পর থেকে প্রতিপক্ষের ব্যাপক হুমকিতে ছিলেন তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা জিয়ারুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী।
এদিকে এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত সংসদ নির্বাচনে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান মেম্বারের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। নিহত জিয়ারুল ছিলেন বাবু চেয়ারম্যানের পক্ষের লোক। গত সংসদ নির্বাচনে বাবু চেয়ারম্যানসহ তার পক্ষের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। গত ৭ জানুয়ারি ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরদিন এলাকার সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হাসান মেম্বারের নির্দেশে নিহত জিয়ারুলের একটি গভীর নলকূপে তালা মেরে দেন। গত কয়েকদিন আগে নিহত জিয়ারুলের একটি কাঁচামালের গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। জিয়ারুলকে এলাকা ত্যাগের জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল হাসান মেম্বারের ক্যাডাররা। জিয়ারুল তার নিরাপত্তাহীনতার কথা থানা পুলিশকেও জানিয়েছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তানোর থানার ওসি আব্দুর রহিম বলেন, জিয়ারুল হত্যায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে।
বিষয় : রাজশাহী হামলা যুবলীগ নেতা নিহত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh