রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ফাইল ছবি
চলতি বছরের শেষেই চালু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। পরের বছর ২০২৫ সালের মধ্যেই চালু হবে দ্বিতীয় ইউনিট। অর্থাৎ পরবর্তী বছরেই এর দুটি ইউনিট পুর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জটিল ও দেশের প্রথম পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে। যা সক্ষমতার নতুন ধাপে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখন রি-কমিশনিং স্টেজ চলছে। এরমধ্য দিয়ে আরও তিনটি ধাপ শেষ করলে আমরা বণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে সক্ষম হবো। এর সঙ্গে গ্রিড ও অন্যান্য বিষয়গুলোর কাজ যদি সঠিকভাবে চলতে থাকে, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ট্রায়াল বা পাইলট কমার্শিয়াল অপারেশনে যেতে সক্ষম হবে। আর এটা হলে টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্টের বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক হবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সবচেয়ে বড় মেগা পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন রয়েছে। হার্ডিঞ্জ সেতুর অদূরে পদ্মার তীরে ১৯৬১ সালে এই প্রকল্প গৃহীত হলেও পাকিস্তানি শোষকদের কূটচালে পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে প্রয়াস মুখ থুবড়ে পড়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭২-৭৪ সালের দিকে এখানে ২০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নৃশংসভাবে হত্যার পর এই প্রকল্প অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৫০ বছর পর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে এর ভিত্তিস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রুশ রাষ্ট্রিয় পারমাণবিক সংস্থা রসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি করেন। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে প্রথম ইউনিটের মূল স্থাপনার কংক্রিট ঢালাই কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে শুরু হয় পারমাণবিক জ্বালানি বাংলাদেশে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পরমাণু সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে সাতটি ধাপে ১৬৮টি ইউরেনিয়ামের অ্যাসেম্বলি রূপপুরের প্রকল্প এলাকায় একেবারে ফ্রেশ ফুয়েল স্টোরেজ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জ্বালানি লোডিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।
চতুর্থবারের মতো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর চেয়ারে বসেছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ‘কাজ চলছে সূচি মাফিক। ২০২৫ সালেই পরমাণু বিদ্যুৎ পাবে দেশ। এ ধরনের টেকনোলজি নিয়ে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করা, যা প্রতিদিনই আমাদের লাগবে, সেটা বেশ কঠিন এবং অনেক বড় কাজ। আর এগুলো গাল-গপ্পো করার জিনিস নয়। ফুয়েল চলে আসা মানেই আমাদের দেশ এখন অনেক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। আমরা এখন বিশ্বের ৩৩তম পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দেশ। চলতি বছর ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট ও ২০২৫ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হবে।’
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে স্থাপিত হচ্ছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর ১ হাজার ২০০ রিয়্যাক্টর। প্রকল্পটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৪০০ মেগা-ওয়াট। এই রিয়্যাক্টরগুলো সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণে সক্ষম।
বিষয় : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh