ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাদ্রাসা পরিচালক, তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানসহ একই পরিবারের চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় একতলা ভবনটির দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসনাবাদ এলাকার ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা’ ভবনে এই বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিকট শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণে মাদ্রাসার পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে যায় এবং ছাদ ও বিমে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয়। মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী থাকলেও শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় তারা ভবনে ছিল না। ফলে এক বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
বিস্ফোরণে আহতরা হলেন—মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮), এবং তাঁদের দুই সন্তান উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭)। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, ভবনটির এক পাশে মাদ্রাসার কার্যক্রম চলত এবং অন্য পাশের কক্ষে গত তিন বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করছিলেন পরিচালক আল আমিন।
খবর পেয়ে পুলিশ, ক্রাইম সিন ইউনিট এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল (বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট) ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, "ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ ও উদ্দেশ্য উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।"
ভবন মালিক পারভীন বেগম জানান, মুফতি হারুন নামের এক ব্যক্তি তিন বছর আগে ভবনটি ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসা চালু করেন। তিনি তাঁর শ্যালক আল আমিন ও তাঁর স্ত্রীকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পারভীন বেগম আক্ষেপ করে বলেন, "মাদ্রাসার আড়ালে সেখানে কী কার্যক্রম চলছিল, তা আমরা বুঝতে পারিনি। বিস্ফোরণে আমার ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।"