নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার রসুলপুর গ্রামে সংঘর্ষের সময় সাকিবুল হাসানের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেসবুক পোস্টে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত আটটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দুই দফায় এই ঘটনা ঘটে তারাব পৌরসভার রসুলপুর গ্রামে। সংঘর্ষে সাবেক যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা সাকিবুল হাসান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা (উত্তর) কমিটির সদস্য হন। এ নিয়ে তিনি তাঁর ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিলে তারাব পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড (উত্তর) ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মিরাজুল মাহিম সেখানে 'গালিসূচক' মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত সহিংস রূপ নেয়।
সংঘর্ষে যুক্ত দুটি পক্ষই স্থানীয় রাজনীতিতে পরিচিত। এক পক্ষে ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা মিরাজুল মাহিম। মিরাজুলের মামা ও যুবদল সভাপতি রবিউল ইসলাম। তারাব এলাকার শহিদুল ইসলাম, যিনি বিগত সরকারের সময় যুবলীগ পরিচয়ে একটি বাহিনীর নেতৃত্ব দিতেন।
অন্যদিকে ছিলেন সম্প্রতি মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হওয়া সাকিবুল হাসান।সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. বাবু (স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার ভাই)।সাকিবুল নিজেও বিগত সরকারের সময় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরাজুল মাহিমের পক্ষ নিয়ে তাঁর মামা রবিউল, মামাতো ভাই সায়েম এবং সাবেক যুবলীগ নেতা শহিদুলের নেতৃত্বে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাকিবুলের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এ সময় সাকিবুলের পক্ষ নিয়ে সেখানে আগে থেকে অপেক্ষমাণ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. বাবুর লোকজনের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালীন তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়।
সংঘর্ষ শেষে দেখা যায়, মিরাজুল মাহিমের পক্ষ নিয়ে আসা শহিদুল ইসলাম বাঁ হাতের একটি আঙুলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে সাকিবুল হাসানের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
আজ দুপুরে মুঠোফোনে সাকিবুল হাসান জানান, এলাকার জলাবদ্ধতা এবং গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নিয়ে মিরাজুল ও রবিউলের সঙ্গে তাঁর পুরোনো বিরোধ ছিল। সম্প্রতি রবিউলের এক ভাতিজা পুলিশের হাতে আটক হলে তারা ধারণা করে যে তিনি পুলিশকে খবর দিয়েছেন।
সাকিবুল বলেন, "ক্ষুব্ধ হয়েই মিরাজুল আমার ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করে। আমি মন্তব্যের কারণ জানতে চাইলে মিরাজুল তার মামা রবিউল ও ডাকাত শহিদুলকে নিয়ে এসে আমার বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায় এবং গুলি করে। আমি শুনেছি, শহীদুল তখন মাদকাসক্ত ছিল, নিজের গুলিতে নিজেই আহত হয়েছেন।" তবে তিনি তাঁর পক্ষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাবুর লোকজনের সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সংঘটনাস্থলে থাকা এক যুবদল নেতা জানান, সাকিবুল বিগত সরকারের আমলে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এই রাজনৈতিক বিরোধের জেরে ফেসবুক মন্তব্যের ঘটনায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয় এবং শহিদুল গুলিবিদ্ধ হন।
ঘটনার বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সবজেল হোসেন সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানান, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আহত শহিদুল অজ্ঞাত কোনো স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে পুলিশ ধারণা করছে।
ওসি আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা ওই এলাকায় গেলে জনৈক ব্যক্তি তিনটি গুলির খোসা এনে পুলিশকে দিয়েছেন। এসব গুলির খোসা কোথা থেকে এসেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিষয় : নারায়ণগঞ্জ ঢাকা বিভাগ সংঘর্ষ গোলাগুলি রূপগঞ্জ
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
