× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রাজউকের পরিদর্শক সাইদুলের অবৈধ সম্পদের পাহাড়

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৫ পিএম । আপডেটঃ ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:১০ পিএম

রাজউক পরিদর্শক মো. সাইদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা জোনাল অফিসে কর্মরত পরিদর্শক মো. সাইদুলের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা এক অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রাজউকের এস্টেট শাখায় কর্মরত অবস্থায় তিনি সিন্ডিকেট তৈরি করে ঘুষ-বাণিজ্য চালিয়ে কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর মো. মোবারক হোসেন নামে এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনে এই পরিদর্শকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজউকের এস্টেট শাখায় পরিদর্শক হিসেবে সাইদুল দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে থাকার সুবাদে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। তাঁর ঘুষ-বাণিজ্যে সাধারণ গ্রাহকেরা অতিষ্ঠ ছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, টাকা ছাড়া কোনো ফাইলের অগ্রগতি হতো না। চুক্তিমতো বিপুল অর্থ দিলেই কেবল কাজ সম্পন্ন হতো।

দুদকে দেওয়া অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, রাজউকের প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি এই কাজগুলো সম্পন্ন করতেন। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন আমলার সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

কয়েক বছরের সরকারি চাকরিতে এই পরিদর্শক অবৈধ উপায়ে শত কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, দক্ষিণখানে তিন কাঠার ওপর বাড়ি নির্মাণ, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। গাজীপুরে পাঁচ কাঠার প্লট। গ্রামে বিঘায় বিঘায় সম্পত্তি ও কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ। পূর্বাচলে শেয়ারে পাঁচ কাঠার প্লট ক্রয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিদর্শক সাইদুলের চলাফেরা কোনো বিত্তশালীর চেয়ে কম নয়। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুষ্ঠু অনুসন্ধান চালালে সাইদুলের আরও অনেক অবৈধ সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসবে।

অভিযোগের বিষয় সাইদুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ তাঁর টঙ্গী, উত্তরা বা বাড্ডার মতো স্থানে বাড়ির দাবির প্রমাণ দিতে পারে, তবে তিনি শাস্তি মাথা পেতে নেবেন। অন্যথায় অভিযোগকারীদের লিখিতভাবে ভুল স্বীকার করতে হবে।

সম্পদ নিয়ে কথোপকথন ও আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, "যদি দোষী প্রমাণিত হই এবং আমার যদি শাস্তি হয়, আমি শাস্তি নিতে বাধ্য।... আর যদি প্রমাণ না হয়, তাহলে কি হবে? যেখানে যেখানে আমার বাড়ির কথা বলেছে, যেমন—আমার টঙ্গীতে বাড়ি আছে, উত্তরা আছে, বাড্ডা আছে—যদি এসবের প্রমাণ না থাকে, তবে লিখিত দিতে হবে।"

তিনি আরও দাবি করেন, তিনি নিয়মিত সরকারকে আয়কর পরিশোধ করেন এবং এর বাইরে তাঁর কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "আমি কি কারো কাছ থেকে টাকা ছিনিয়েছি, নাকি কারো কাছ থেকে জোর করে নিয়েছি? আমার কাছে কেউ একটা টাকাও পাবে না।"

কথোপকথনে প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা দক্ষিণখানে তাঁর একটি প্লট থাকার বিষয়ে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, "দক্ষিণখানে তো আমার আছে, আমি তো স্বীকার করি না যে আছে।" তবে এই প্লট নিয়েও প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, "একটা প্লটের কয় টাকা দাম? 

তিনি যুক্তি দেন, "আপনি যদি এখন ১০ বছর আগে মনে করেন একটা গেঞ্জি কিনেছেন ২০০ টাকায়, পরে কি সেটা ২০০ টাকাই থাকে?"

৩১ বছরের সরকারি চাকরিতে তিনি কীভাবে এই সম্পদ গড়লেন এবং তাঁর দামি পোশাক-আশাক ও ঘড়ির দামের সঙ্গতি নিয়ে জানতে চায়। জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, "৩১ বছরে কি আমি কিছুই করতে পারি না? আপনারা যে খালি উল্টোপাল্টা করেন, আমি কি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছি?"

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের একজন কর্মকর্তা ন্যাশনাল ট্রিবিউনকে জানান, আসলে যারা চাকরি করেন তারা এসব কাজে জড়িত থাকে এবং এই অবৈধ সম্পদ করে এটা সত্য। শুধু চাকরি করে ঢাকা শহরে থাকা এবং যাতায়াত করতে সেই টাকা হয় না। তাছাড়া ঢাকা শহরের মধ্যে প্লট, ফ্লাট এত সম্পদ করা এটা তো অবৈধ টাকার সম্পদে হবে। ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে এটা তো বোঝাই যায়। তিনি আরো জানান, কেউ যদি শিকার নাও করেন তারপরও মানুষ এই বিষয়ে বুঝেন জানেন বলে জানান তিনি। 

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.