গতকাল শুক্রবার সকালে ৫.৭ মাত্রার মাঝারি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ। সেই কম্পনের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে আবারও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে রাজধানীতে, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩.৭। ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এই কম্পন অনুভূত হয়। এর আগে আজ সকালেও নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় মৃদু ভূমিকম্প হয়, যার মাত্রা ছিল ৩.৩। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এর আগে গতকালের ভূমিকম্পে সারাদেশে শিশুসহ ১০ জনের প্রাণহানি এবং ছয় শতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হলো। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে আঘাত হানা ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদী। আবহাওয়া অধিদপ্তর এই তথ্য নিশ্চিত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের মতো ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে একটি অপেক্ষাকৃত বড় ভূমিকম্পের পর একাধিক আফটারশক বা পরাঘাত হওয়া স্বাভাবিক। আজকের সন্ধ্যার ৩.৭ মাত্রার কম্পন সেই পরাঘাতেরই অংশ কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গতকাল শুক্রবারের ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট হতাহতের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নরসিংদী। সেখানে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, ঢাকায় চারজন এবং নারায়ণগঞ্জে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনি শুরু হলে আতঙ্কে অনেকেই দ্রুত ভবন থেকে লাফিয়ে নামার চেষ্টা করেন, যার ফলে আহত হন ছয় শতাধিক মানুষ। আহতদের মধ্যে অনেককেই রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে কয়েকটি ভবনে ফাটল ও কিছু ভবন হেলে পড়ার মতো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটেছে।
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলছেন, বাংলাদেশ বিশেষত রাজধানী ঢাকা একটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত। এই ধরনের ঘন ঘন মৃদু বা মাঝারি মাত্রার কম্পন ভবিষ্যতে একটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে। বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় এখনই যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং ভবন নির্মাণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) কঠোরভাবে অনুসরণ করা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা।