আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ (সদর–পাঁচবিবি) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন মাসুদ রানা প্রধান। এই খবরে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের বড় অংশ ফয়সাল আলিমকে বেশি যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে, মনোনয়ন ঘোষণার পর জামায়েত কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক জামায়াত কর্মী আলহামদুলিল্লাহ লিখে পোস্ট দিয়েছেন। স্থানীয় ভোটারদের মতে, বিএনপি যথাযথ ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দিলে জামায়েত সহজেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারে।
রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান শিক্ষিত ও সচেতন তরুণ প্রজন্ম এমন নেতৃত্ব চায়, যারা আধুনিক চিন্তাভাবনা ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির প্রতীক। মাসুদ রানা শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ও রাজনৈতিক পরিপক্কতাও প্রশ্নবিদ্ধ। অন্যদিকে ফয়সাল আলিম উচ্চশিক্ষিত ও রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কৌশলগত নেতৃত্বের দিক থেকে ফয়সাল আলিম অনেক এগিয়ে আছেন বলেই মনে করছেন দলীয় নেতারা।
এছাড়া স্থানীয় রাজনীতিতে রানা প্রধানের নামের সঙ্গে বেশ কিছু বিতর্ক জড়িয়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে সহায়তা করেছেন। তাছাড়া চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন এবং কিছু সহযোগীর মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথাও শোনা যাচ্ছে। জয়পুরহাট থানার চকবরকত ইউনিয়নে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে গরু লুট ও হিন্দু পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগও স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, এসব অভিযোগ নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীদের হাতে শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, যা ধানের শীষের প্রার্থীর ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ফয়সাল আলিম জয়পুরহাটের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার পিতা মরহুম আব্দুল আলিম। এই পরিবারের প্রতি দীর্ঘদিনের জনআস্থা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং এলাকায় অব্যাহত জনসম্পৃক্ততা তাকে তৃণমূলের কাছে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, জয়পুরহাট-১ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬৩ হাজার। এর মধ্যে মরহুম আব্দুল আলিমের প্রায় ৬০/৭০ হাজারের মতো নিজস্ব ভোটব্যাংক আজও সক্রিয় রয়েছে, যা ফয়সাল আলিম সহজেই কাজে লাগাতে পারবেন।