× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বিএনপি প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি, নিহত ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫০ এএম । আপডেটঃ ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫১ এএম

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর জনসংযোগের সময় গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীতে নির্বাচনী জনসংযোগ চলাকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর কর্মীদের ভিড়ে মিশে গিয়ে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম সরোয়ার হোসেন, যিনি ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে পরিচিত এবং তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। এই ঘটনায় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেখানে চট্টগ্রাম–৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। গুলির শব্দে মুহূর্তেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা–কর্মীরা।

গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত


গুলিবর্ষণের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এরশাদ উল্লাহ যখন নেতা–কর্মীদের নিয়ে প্রচারপত্র বিলি করছেন, তখন তাঁর সঙ্গেই ছিলেন সরোয়ার হোসেন। হঠাৎ এক যুবক কর্মীদের ভিড়ে ঢুকে পড়ে খুব কাছ থেকে সরোয়ারের ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একনাগাড়ে সাত থেকে আটটি গুলি করা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সরোয়ারের ভাই আজিজ হোসেনের দাবি, সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী মো. রায়হানসহ কয়েকজন সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, খুনে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীরা একটি মাইক্রোবাসে করে এসে জনসংযোগে আসা বিএনপি লোকজনের সঙ্গে বহরে মিশে যায়।

গুলিবিদ্ধ পাঁচজনের মধ্যে সরোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এরশাদ উল্লাহ: নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ জানান, এরশাদ উল্লাহর পেটে ছররা গুলি লাগলেও তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

অন্যান্য আহত: আহত অন্যরা হলেন—পাঁচলাইশ তিন নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইরফানুল হক ওরফে শান্ত, বিএনপি কর্মী আমিনুল হক ও মুর্তজা হক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ইরফানুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।


পূর্ববিরোধের জেরে খুন?

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সঙ্গে নিহত সরোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এর আগেও গত ৩০ মার্চ বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল, যেখানে দুজন মারা গেলেও তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।

নিহত সরোয়ারের ভাই আজিজ হোসেন দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের লোকজন তাঁর ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। নিরাপত্তা থাকবে, এই আশাতেই সরোয়ার জনসংযোগে অংশ নিয়েছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, "এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির প্রার্থী গণসংযোগ করার সময় শত শত লোক অংশ নেন। সরোয়ার সেখানে অংশ নিলে সন্ত্রাসী দুটি দলের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে তাঁকে গুলি করা হয়।"

বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে ভিড় করেন নেতা–কর্মীরা। আজ রাতে। ছবি: সংগৃহীত 


এদিকে, আহতদের দেখতে গিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, "অপরাধীদের মূল টার্গেট ছিল সরোয়ার, এরশাদ উল্লাহ নয়। এই হত্যাকাণ্ড যারা করতে পারে, তাদের ব্যাপারে পুলিশের অনুমান আছে। কিলিং মিশনে যারা ছিল, তাদের শনাক্ত করার মতো কিছু আলামত পাওয়া গেছে।"

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, "নির্বাচনের আগে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উদ্বেগজনক। জনসভা বা গণসংযোগের ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানানোর জন্য আমি সব দলের প্রতি অনুরোধ জানাব। এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের আগে পুলিশকে জানাননি।"


এলাকায় আতঙ্ক, থমথমে অবস্থা

ঘটনার পর চালিতাতলী খন্দকারপাড়া এলাকায় তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাত ১১টার দিকে দেখা যায়, দোকানপাট সব বন্ধ, মানুষজনের চলাচল নেই। স্থানীয় লোকজন ভয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। পিবিআইয়ের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.