কারখানার আগুন চার ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ছবি: সংগৃহীত
বন্দরনগরীর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সিইপিজেডের ৫ নম্বর রোডে অবস্থিত অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও চীনা মালিকানাধীন জিহং মেডিকেল কোম্পানি লিমিটেডের গুদামে এ আগুন লাগে।
অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় ভবনের সাততলায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তীব্রতা বেড়েছে এবং তা বর্তমানে ছয়তলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।
ইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভেতরে কোনো শ্রমিক বা কর্মী আটকে নেই।
ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানার শ্রমিকদের বরাতে জানা যায়, সাততলা ভবনটিতে দুটি কারখানা কার্যক্রম পরিচালনা করত—অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানি লিমিটেড। ছয় ও সাততলা মূলত উভয় কারখানার গুদাম ও মালামাল সংরক্ষণের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
অ্যাডামস ক্যাপসের সেলাই ও কাটিং বিভাগ ছিল দুই ও তিনতলায়, যেখানে প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করতেন। অন্যদিকে, জেহং মেডিকেলের পাঁচতলায় ৬০০ থেকে ৭০০ শ্রমিক সার্জিক্যাল মাস্ক, পিপিই এবং হ্যান্ড গ্লাভসসহ বিভিন্ন নন-ওভেন মেডিকেল সামগ্রী তৈরি করতেন।
অ্যাডামস ক্যাপসের ফাইন্যান্স ম্যানেজার রিফাত হাসান জানান, দুপুরের খাবারের কিছুক্ষণ পর ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় স্টোরেজ বা গুদাম এলাকায়। তিনি বলেন, "আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সব শ্রমিককে নিরাপদে বের করে আনি। কয়েক দিন আগে পাওয়া নতুন অর্ডারের কাপড় ও কাঁচামাল গুদামে আনা হয়েছিল। সবকিছু এখন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।"
জিহং মেডিকেলের সেলাই অপারেটর ইয়াসিন বলেন, "দুপুরের খাবারের পর এক নারী সহকর্মী তিনতলায় আগুনের গন্ধ পাওয়ার কথা জানান। পরে সাততলায় গিয়ে দেখি কালো ধোঁয়া ও আগুনের শিখা। সঙ্গে সঙ্গে নিচে নেমে অন্যদের বেরিয়ে যেতে বলি।" তিনি আরও যোগ করেন, দ্রুত নিচে নামার সময় কয়েকজন নারী শ্রমিক আহত হন, তাদের বেপজা মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান নিশ্চিত করেছেন, "শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ভেতরে এখন কেউ নেই।"
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, ভবনের ভেতরে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, "আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন। আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলেও পানির চাপ কম থাকায় কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।"
ভবনে গুদাম রাখার বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস অ্যান্ড বন্ড কমিশনার মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, বন্ড ওয়্যারহাউস অবশ্যই কারখানা কম্পাউন্ডের মধ্যে হতে হবে এবং নির্মাণের আগে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। তিনি সতর্ক করেন, বন্ড ওয়্যারহাউজে বৈদ্যুতিক সংযোগ রাখার অনুমতি নেই; কেউ সংযোগ রাখলে তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে না। তবে আজকের অগ্নিকাণ্ডে এই ধরনের কোনো অনিয়ম ছিল কি না, তা তদন্তের পরই জানা যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh