মুন্সিগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে হওয়া এই সংঘর্ষে এক পক্ষের অন্তত ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সবাই মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উজির আহমেদ-এর অনুসারী। আহত ব্যক্তিরা হলেন: সাইদুল মাদবর (৪৫), মজনু সরকার (৫৫), শামীম সরকার (২৭), জাহাঙ্গীর সরকার (৩৫), নজরুল সরকার (৬৫), শরীফ মাদবর (৬৫), সোহেল (৩৫) এবং লিটন (২৫)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সোহেল ও লিটনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত

স্থানীয় সূত্র জানায়, মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ রায়হানের সঙ্গে উজির আহমেদের দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি উজির আহমেদের পক্ষ মুন্সিকান্দি এলাকায় একটি ড্রেজারের পাইপলাইন স্থাপন করে। দুই দিন আগে রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা সেই পাইপগুলো ভেঙে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার রাত আটটার দিকে মুন্সিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় ওয়াহিদ রায়হানের অনুসারী ১০-১৫ জনের একটি দল উজির আহমেদ পক্ষের লোকজনের ওপর অতর্কিত গুলি চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ৮ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আহমেদ কবির জানান, রাত ৯টার দিকে সাতজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের শরীরে ছররা গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এদের মধ্যে দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং বাকিরা নিজেদের ইচ্ছায় ঢাকায় চলে গেছেন।

এ বিষয়ে উজির আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, "ওয়াহিদ রায়হান আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়ে দল বানাচ্ছেন। তার লোকজন বিনা উসকানিতে আমার অনুসারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।" এতে অন্তত ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে ওয়াহিদ রায়হানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং এলাকায় বিশেষ অভিযান চলছে।