রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি খানকা শরিফে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলাকালে স্থানীয় একদল উত্তেজিত জনতা এই হামলা চালায়।
হামলার নেপথ্যে উত্তেজনা:
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুর রহমান ভান্ডারীর প্রায় ১৫ বছর পুরোনো এই খানকা শরিফটিতে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানে ভান্ডারি ও মুর্শিদী গানের আয়োজন করা হয়, যা নিয়ে আগে থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ ঘটনায় পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও হামলা ঠেকানো সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:
হামলার সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হামলার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শতাধিক লোক খানকা শরিফটি ভাঙচুর করছে, অথচ সেখানে উপস্থিত পুলিশ হামলার সময় কোনো বাধা দেয়নি।
ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, "উত্তেজিত মানুষের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে, অল্প কয়েকজন পুলিশের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না।" তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে খানকা শরিফের প্রতিষ্ঠাতা আজিজুর রহমান ভান্ডারি বলেন, "পুলিশ, ডিবি, এবং ওসি নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা যদি রক্ষা না করতে পারেন, তাহলে অভিযোগ করে কী লাভ?"
রাজনৈতিক যোগসূত্র নিয়ে বিতর্ক:
আজিজুর রহমান ভান্ডারি অভিযোগ করেন যে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা এই হামলার নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে জামায়াতের কর্মীরাও জড়িত ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন। তবে গোলাম মোস্তফা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "হামলার সময় আমি সেখানে ছিলাম না।" একইসাথে, উপজেলা জামায়াতের আমির এবং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এই ঘটনার সঙ্গে তাদের দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান ভান্ডারি আইনি ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।